সমাজকাল ডেস্ক :
বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ এবং এর অঙ্গসংগঠনগুলোর রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের জারি করা প্রজ্ঞাপন নিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছে বিভিন্ন দেশ। এই প্রেক্ষাপটে যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছে, তারা বাংলাদেশের নির্দিষ্ট কোনো রাজনৈতিক দলকে সমর্থন করে না। বরং যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান সর্বজনীন মানবাধিকার, ন্যায়বিচার এবং গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের পক্ষে।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে এক প্রশ্নের জবাবে দপ্তরের প্রধান উপ-মুখপাত্র টমাস “টমি” পিগট বলেন, “আমরা জানি যে— অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আওয়ামী লীগকে সবধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড থেকে নিষিদ্ধ করেছে, যতক্ষণ না দলটির বিরুদ্ধে বিশেষ ট্রাইব্যুনালের রায় আসে। তবে আমরা বাংলাদেশের কোনো নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলকে সমর্থন করি না। বরং আমরা একটি মুক্ত ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া এবং সবার জন্য ন্যায়সংগত ও স্বচ্ছ বিচার প্রক্রিয়াকে সমর্থন করি।”
এ সময় তিনি আরও বলেন, “আমরা সব দেশের— তার মধ্যে বাংলাদেশও রয়েছে— প্রতি আহ্বান জানাই, যেন মতপ্রকাশ, শান্তিপূর্ণ সমাবেশ এবং সংগঠন করার স্বাধীনতা সবার জন্য নিশ্চিত করা হয়।”
উল্লেখ্য, গত সপ্তাহে অন্তর্বর্তী সরকার এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে ঘোষণা দেয়, বিচারিক কার্যক্রম শেষ না হওয়া পর্যন্ত আওয়ামী লীগ, এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর সবধরনের রাজনৈতিক কার্যক্রম স্থগিত থাকবে। বিষয়টি অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে তীব্র প্রতিক্রিয়ার জন্ম দেয় এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়েও প্রশ্নের মুখে পড়ে বাংলাদেশ সরকার।
একই ব্রিফিংয়ে আরেক প্রশ্নকারীর দাবি ছিল, অন্তর্বর্তী সরকার সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর সঙ্গে বৈঠক করছে এবং উগ্র ধর্মীয় রাজনীতিকে প্রশ্রয় দিচ্ছে। এর জবাবে যুক্তরাষ্ট্রের মুখপাত্র সরাসরি কোনো মন্তব্য না করে বলেন, “আমরা বাংলাদেশ ও এর জনগণের সঙ্গে ৫০ বছরের অংশীদারিত্বকে মূল্য দিই এবং এই অংশীদারিত্ব আরও গভীর করতে আগ্রহী। এই উদ্দেশ্যে বর্তমান সরকার সঙ্গেও কাজ করে যাচ্ছি।”
এর আগে ভারতের পক্ষ থেকেও আওয়ামী লীগের নিষেধাজ্ঞা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ধরনের পদক্ষেপ বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন উত্তেজনা সৃষ্টি করতে পারে এবং আগামী জাতীয় নির্বাচনের বৈধতা নিয়ে আন্তর্জাতিকভাবে প্রশ্ন তুলতে পারে।