২২ মে ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

৩ আগস্ট , যে খ্যাতিমানদের হারিয়েছি এই দিনে

সমাজকাল ডেস্ক :

আজ শনিবার, ৩ আগস্ট। যে খ্যাতিমানদের হারিয়েছি এই দিনে। তাদের প্রতি শ্রদ্ধা।

গ্রেগরীয় বর্ষপঞ্জী অনুসারে ৩ আগস্ট বছরের ২১৫তম (অধিবর্ষে ২১৬তম) দিন। বছর শেষ হতে আরো ১৫০ দিন বাকি রয়েছে।

এভাবে দিন আসে দিন যায়। অতীত কালের সময় বাড়ে। কোন না কোনভাবে প্রতিটি দিন হয় ইতিহাস। প্রতিদিন জন্ম নেয় অসংখ্য মানুষ। এরমধ্যে কেউ কেউ ইতিহাসের অংশ হন। খ্যাতিমানদের কেউ কেউ আবার চলে যান গড়ে। রয়ে যায় তাদের কর্ম।

বিখ্যাত ব্যক্তিরা আজকের এবং আগামীর জন্য অনুপ্রেরণা। তাই তাদের সম্পর্কে জানা আজকের প্রজন্মের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। ইতিহাসের এসব বরেণ্য ব্যক্তিদের শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করি। সবার নাম উল্লেখ করা সম্ভব হয়নি।

প্রজন্মের এই চাহিদাকে মাথায় রেখে সমাজকালের পাঠকদের জন্য প্রতিদিনের আয়াজন সেই সব আলোকিত ব্যক্তিদের স্মরণে, এই দিনে যাদের হারিয়েছি।

১২৭২:  সপ্তম হিজরীর বিশিষ্ট মনীষি ও ধর্মীয় ব্যক্তিত্ব গীয়াস উদ্দীন আব্দুল করিম ইবনে আহমদ।

১৪৬০: স্কটল্যান্ডের রাজা দ্বিতীয় জেমস।

১৭২১:  গিনলিং গিবনস, ইংরেজ ভাস্কর ও কাঠ খোদাই শিল্পী।

১৮৪৬ :  প্রখ্যাত আলেম সাহেবে জাওয়াহের বা রত্নের স্বত্তাধিকারী হিসেবে খ্যাত শেখ মো: হাসান নাজাফী।

১৯২৮ : সৈয়দ আমীর আলী

সৈয়দ আমির আলী ছিলেন একজন ভারতীয় মুসলিম আইনজ্ঞ যিনি কলকাতা হাইকোর্টের প্রথম মুসলিম বিচারপতি ছিলেন। এছাড়াও তিনি ছিলেন একাধারে একজন আইনজ্ঞ, সমাজ সংস্কারক এবং লেখক। তিনি ইসলামের ইতিহাস নিয়ে কয়েকটি বিখ্যাত বই লিখেছিলেন।

তার বইগুলোর মধ্যে অন্যতম হল দ্যা স্পিরিট অফ ইসলাম। এই বইটিই পরবর্তীকালে ব্রিটিশ রাজ্যের সময় ভারতের আইনে মুসলিম আইন প্রবর্তন করার পেছনে ভূমিকা রেখেছিল। সৈয়দ আমীর আলী অল ইন্ডিয়া মুসলিম লীগের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ছিলেন। উনিশ শতকের আশির দশকে তিনি ভারতীয় মুসলমানদের রাজনৈতিক জাগরণের উদ্যোক্তা ছিলেন।

১৮৭৩ – ১৮৭৮ সালে কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজে মুসলমান আইনের ও ১৮৮৪ সালে ঠাকুর আইনের অধ্যাপক, ১৮৭৮ – ১৮৮১ সালে কলকাতার চিফ প্রেসিডেন্সি ম্যাজিস্ট্রেট এবং ১৮৯০ সালে কলকাতা হাইকোর্ট এর প্রথম মুসলিম বিচারপতি নিযুক্ত হন।

১৯০৪ সালে অবসর গ্রহণ করে বিলেতে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। বিভিন্ন সময়ে বঙ্গীয় ব্যবস্থাপক সভা ও কেন্দ্রীয় ব্যবস্থাপক সভার সদস্য, হুগলি ইমামবাড়ার সভাপতি, সেন্ট্রাল ন্যাশনাল মহামেডান অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিষ্ঠাতা-সম্পাদক এবং ১৯০৯ সালে লন্ডন প্রিভি কাউন্সিলের প্রথম ভারতীয় সদস্য ছিলেন।

মর্লি-মিন্টো শাসনসংস্কারে মুসলমানদের রাজনৈতিক দাবির উপর যে স্বতন্ত্র গুরুত্ব দেওয়া হয়েছিল তার মূলে তিনি ছিলেন। মুসলিম লীগের রাজনৈতিক ও ধর্মীয় মতাদর্শের সমর্থক ও লন্ডন শাখার উৎসাহী কর্মকর্তা ছিলেন।

১৯৫৪: বিশিষ্ট ফরাসী লেখিকা সিডেন গ্যাবরিয়াল কোল্ট ।

১৯৫৭ :  দেবদাস গান্ধী, মহাত্মা গান্ধীর কনিষ্ঠ পুত্র এবং খ্যাতনামা সাংবাদিক।

১৯৭৫: অমর বসু, ব্রিটিশ বিরোধী বাঙালি বিপ্লবী

অমর বসু ব্রিটিশ বিরোধী একজন বাঙালি বিপ্লবী এবং বামপন্থী নেতা ছিলেন। তিনি শ্রমিক আন্দোলনের সাথেও যুক্ত ছিলেন। অমর বসুর জন্ম কলকাতায়। তার পিতা স্বদেশী আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক ও স্বাধীনতা সংগ্রামী অতীন্দ্রনাথ বসু।

অমর বসু কিশোর বয়সে যুগান্তর বিপ্লবী দলে যোগদান করেন। ১৯০৫ সালে বঙ্গভঙ্গ আন্দোলনের সময়ে স্বেচ্ছাসেবক হিসাবে কলকাতার রাস্তায় বন্দেমাতরম গান গেয়ে বেড়াতেন। পিতার প্রতিষ্ঠিত ‘সিমলা ব্যায়াম সমিতি’ পরিচালনায় যুক্ত ছিলেন।

১৯১৬ সালে পিতা-পুত্র একসাথে পাঁচ বছর কারাদণ্ড ভোগ করেন। তিনি ফরওয়ার্ড ব্লক প্রতিষ্ঠায় সুভাষচন্দ্র বসুকে সাহায্য করেছিলেন। ভারতের স্বাধীনতার পর কংগ্রেস ত্যাগ করে তিনি বামপন্থীদের সাথে মিলিত হন। ১৯৫২, ১৯৫৭ এবং ১৯৬৩ সালে বিধানসভার সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি শ্রমিক আন্দোলনের সাথেও যুক্ত ছিলেন।[১] উনি মারা যাবার পর ওনার স্মৃতির উদ্দেশ্যে কলকাতা পৌরসংস্থা চোরবাগান লেন রাস্তাটির নাম পরিবর্তন করে অমর বসু সরণী রাখা হয়।

১৯৭৮: মোহাম্মদ ওয়ালিউল্লাহ, সাংবাদিক ও লেখক।

২০০৯ : সুভাষ চক্রবর্তী

সুভাষ চক্রবর্তী একজন ভারতীয় বাঙালি রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব এবং পশ্চিমবঙ্গ সিপিআই(এম)-এর অবিসংবাদী নেতা ছিলেন। তিনি পশ্চিমবঙ্গ সরকারের ক্রীড়া, পরিবহন, এবং যুব দপ্তরের মন্ত্রী ছিলেন। ছাত্র আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে রাজনীতিতে আসেন।

সুভাষ চক্রবর্তী তার পুরো রাজনৈতিক জীবনে সমগ্র বাংলা জুড়ে দারুন জনপ্রিয় ছিলেন। ১৯৭৭ সালে প্রথম বামফ্রন্ট সরকার ক্ষমতায় আসার সময় তিনি প্রথমবার বেলগাছিয়া পূর্ব বিধানসভা কেন্দ্র থেকে বিধায়ক নির্বাচিত হন।

১৯৮২ সালে তিনি পশ্চিমবঙ্গ সরকারে যুব, ক্রীড়া এবং দুগ্ধ দপ্তরের মন্ত্রী হন। ১৯৮৭ সালে সুভাষ চক্রবর্তী সরকারের যুব ও পর্যটন দপ্তরের পূর্ণমন্ত্রী হন। ১৯৯১ সালে গঠিত বিধানসভায় তিনি একই দপ্তরের মন্ত্রী ছিলেন। ১৯৯৬ সালে তিনি পরিবহন ও ক্রীড়া মন্ত্রী হন।

 ২০০১ সালে তিনি এইচআরবিসির অতিরিক্ত মন্ত্রী হন। ২০০৬ সালে তিনি পরিবহন, ক্রীড়া ও যুব সেবা মন্ত্রী হন। তিনি আমৃত্যু পরিবহন, যুব এবং ক্রীড়া দপ্তরের মন্ত্রী ছিলেন।

তথ্যসূত্র: উইকিপিডিয়া ও ইতিহাস সম্পর্কিত বই