আজ ৩০ এপ্রিল, মঙ্গলবার। ইতিহাসের এই দিনে যাদের হারিয়েছি , তাদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা।
সমাজকাল ডেস্ক :
আজ মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল। গ্রেগরীয় বর্ষপঞ্জির ১২০তম দিন। বছর শেষ হতে বাকি ২৪৫ দিন। ইতিহাসের পাতায় প্রতিটি দিন বহন করে আলাদা গুরুত্ব। কিছুদিন শুধু ঘটনাবহুল নয়, বরং সেইসব মহৎ মানুষদের বিদায়ের দিন হিসেবেও চিহ্নিত, যাঁরা নিজেদের কর্ম, আদর্শ ও চিন্তায় ইতিহাসকে নতুন মোড় দিয়েছিলেন। ৩০ এপ্রিল তেমনই একটি দিন, যেদিন আমরা হারিয়েছি কিছু মহান চিন্তাবিদ, সংস্কৃতিকর্মী, রাষ্ট্রনায়ক ও সমাজ পরিবর্তনের দূতদের। সমাজকাল আজ তাদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানায়।
🔹 হিটলার (১৮৮৯–১৯৪৫)
এই দিনেই বার্লিনের এক বাঙ্কারে আত্মহত্যা করেন ইতিহাসের অন্যতম বিভীষিকাময় রাজনৈতিক চরিত্র অ্যাডলফ হিটলার। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শেষ দিকে, ১৯৪৫ সালের ৩০ এপ্রিল, সোভিয়েত বাহিনী বার্লিনে প্রবেশের ঠিক আগমুহূর্তে হিটলার আত্মঘাতী হন। নাৎসি শাসন ও হলোকাস্টের মতো নির্মমতা এবং বিশ্ব রাজনীতিতে চরম উগ্র জাতীয়তাবাদের এক রক্তাক্ত অধ্যায় এখানেই শেষ হয়। তাঁর মৃত্যু যেমন বহু মানুষের নিঃশ্বাস ফেলবার সুযোগ এনে দিয়েছিল, তেমনই ভবিষ্যতের জন্য রেখে গেছে ভয়াবহ শিক্ষা।
🔹 এডগার হুয়েভার (১৮৯৫–১৯৭২)
যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন (FBI)-এর প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক এডগার হুয়েভার ১৯৭২ সালের এই দিনে মারা যান। প্রায় পাঁচ দশক ধরে আমেরিকার এই গোয়েন্দা সংস্থার নেতৃত্ব দিয়ে তিনি দেশটির আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার ক্ষেত্রে এক অনন্য নজির গড়েন। তবে সমালোচকরা তাঁকে ‘গোপন ফাইলের সম্রাট’ বলেও অভিহিত করেছেন, যিনি ব্যক্তিগত গোপনীয়তা লঙ্ঘন ও রাজনৈতিক চাপে প্রভাবিত হতেন না এমন দাবি করলেও বাস্তবতা ছিল ভিন্ন।
🔹 সেলিনা হেস্টিংস, কাউন্টেস অব হান্টিংডন (১৭০৭–১৭৯১)
১৮ শতকের ইংল্যান্ডের এক প্রভাবশালী ধর্মীয় ব্যক্তিত্ব সেলিনা হেস্টিংস, যিনি ১৭৯১ সালের ৩০ এপ্রিল মৃত্যুবরণ করেন। মেথডিস্ট আন্দোলনের একজন গুরুত্বপূর্ণ পৃষ্ঠপোষক হিসেবে তিনি অসংখ্য চার্চ, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান এবং শিক্ষাকেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করেন। তাঁর সমাজসেবামূলক ভূমিকা আজও স্মরণযোগ্য।
🔹 সান্টি সান্টামারিয়া (১৯৫৭–২০১১)
বিশ্বখ্যাত স্প্যানিশ শেফ সান্টি সান্টামারিয়া ২০১১ সালের এই দিনে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। তিনটি মিশেলিন স্টার অর্জন করা এই রন্ধনশিল্পী কাতালান কুইজিনের মাধ্যমে গুরমে জগতের এক অনন্য নাম হয়ে উঠেছিলেন। তিনি কেবল রান্নার ধারা পাল্টাননি, বরং খাদ্যশিল্পে পরিবেশ ও পুষ্টির গুরুত্বও তুলে ধরেছিলেন।
🔹 বাংলার কিছু শ্রদ্ধেয় প্রয়াতজন
এই দিনটি বাংলা সাহিত্য, সংগীত ও রাজনীতির মঞ্চ থেকেও ছিনিয়ে নিয়েছে কিছু প্রিয় মুখ। তাঁদের অনেকে হয়তো আন্তর্জাতিকভাবে পরিচিত না হলেও, স্থানীয় সাংস্কৃতিক জগতে, শিক্ষাঙ্গনে কিংবা আন্দোলনের পরিসরে রেখে গেছেন দৃষ্টান্তমূলক ভূমিকা। এই সব গুণীজনের অবদান সমাজের ভিত মজবুত করেছে।
আজ যাঁদের স্মরণ করছি, তাঁরা কেউ ইতিহাসের শিক্ষা, কেউ প্রতিরোধ, কেউ উদ্ভাবন, আবার কেউ সৌন্দর্যের সাধক। তাঁদের মৃত্যুর মধ্য দিয়েও তাঁরা থেকে গেছেন—চিন্তার ভুবনে, কর্মের ইতিহাসে, আমাদের চেতনায়।
সমাজকাল পরিবারের পক্ষ থেকে তাঁদের প্রতি রইল গভীর শ্রদ্ধাঞ্জলি।