১ জুন ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
১৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

১২ কেজি এলপিজি’র দাম বেড়ে ১৩৬৬ টাকা

নিজস্ব প্রতিবেদক:

তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাসের (এলপিজি) মূল্য কমার পর তা আবার বেড়েছে। চলতি মাসের জন্য ভোক্তা পর্যায়ে বেসরকারি খাতের ১২ কেজির এলপিজির দাম ১ হাজার ৩৬৩ টাকা থেকে বেড়ে ১ হাজার ৩৬৬ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
একই হারে বেড়েছে অন্যান্য আকারের সিলিন্ডারের দামও। গত বছরের জুলাই মাসে ১২ কেজি এলপিজি’র দাম ছিল ৯৯৯ টাকা।

আর গাড়িতে ব্যবহৃত অটোগ্যাসের নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে প্রতি লিটার ৬২ টাকা ৭০ পয়সা, যা এত দিন ছিল ৬২ টাকা ৫৩ পয়সা।

তবে সরকারি কোম্পানির সরবরাহ করা সাড়ে ১২ কেজি এলপিজির দাম ৬৯০ টাকা অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে। যদিও সারাদেশে চাহিদার তুলনায় এটি মাত্র ১ থেকে দেড় শতাংশের মত সরবরাহ করার সক্ষমতা রয়েছে। আবার যাও সরবরাহ করা হয় তা সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে।

চলতি জুলাই মাসের জন্য মঙ্গলবার (২জুলাই) দুপুরে রাজধানীর কাওরান বাজারে বিইআরসি হলরুমে এক সংবাদ সম্মেলনে নতুন দাম ঘোষণা করেন বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) চেয়ারম্যান নুরুল আমিন।

বিইআরসি প্রতি কেজি এলপিজির খুচরা দাম ১১৩ টাকা ৮৬ পয়সা নির্ধারণ করেছে। সে অনুযায়ী সাড়ে ৫ কেজি থেকে ৪৫ কেজি ওজনের বোতলজাতকৃত এলপিজির দাম বেড়েছে।

যদিও বাজারে কমিশনের বেঁধে দেওয়া মূল্যের চেয়ে ব্যবসায়ীরা ইচ্ছে মত বেশি দাম এলপিজি বিক্রি করছেন বলে দীর্ঘদিন ধরেই ভোক্তারা অভিযোগ করে আসছেন।

এলপিজি মূলত প্রোপেন ও বিউটেন এর একটি মিশ্রিত অনুপাত। এই দুটিই আমদানি করা হয়। সৌদি আরামকোর ঘোষিত মূল্য (সৌদি সিপি) ধরে দেশে এলপি গ্যাসের দাম ঠিক করে বিইআরসি।

এলপিজি আমদানিকারক কোম্পানিগুলোর ইনভয়েস মূল্যকে আমলে নিয়ে দর ঘোষণা করে। দেশে ২০টি কোম্পানি এলপিজির কাাঁচামাল আমদানি করে। দাম নির্ধারণে ডলারের মূল্যও একটি ভূমিকা রাখে। বাংলাদেশে প্রোপেন বিউটেনকে ৩৫:৬৫ অনুপাতে মিশ্রিত করে এলপিজি তৈরি করা হয়।

সংবাদ সম্মেনে বলা হয়, সৌদি আরামকোর মাধ্যমে নির্ধারণ করা দাম অনুযায়ী প্রোপেন ও বিউটেনের গড় মূল্য প্রতি মেট্রিক টন ৫৭০ দশমিক ২৫ মার্কিন ডলার এবং মুদ্রা বিনিময় মূল্য ১১৮.৪৭ টাকা বিবেচনায় এলপিজির নতুন দর নির্ধারণ করা হয়েছে।

গত বছরের জুলাই মাসে বেসরকারি খাতের ১২ কেজি ওজনের তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাসের (এলপিজি) দাম ছিল ৯৯৯ টাকা। ৮ মাসের ব্যবধানে গত মার্চ মাসে সমপরিমাণ এলপিজির দাম বেড়ে ১৪৮২ টাকা দাঁড়িয়েছিলো। পরবর্তীতে ওই দাম কোন মাসে বাড়ে আবার কোন মাসে কমে।

এক যুগেরও বেশি সময় ধরে বাসাবাড়িতে পাইপলাইনে নতুন গ্যাস সংযোগ বন্ধ থাকার পাশাপাশি বিভিন্ন এলাকায় গ্যাস সংকটের কারণে গৃহস্থালি রান্নার পাশাপাশি রেস্তোরাঁ, পরিবহন, ছোট-বড় শিল্পকারখানায়ও এলপিজি ব্যবহার বাড়ছে। এই বাজারের অন্তত ৯৯ শতাংশ বেসরকারি খাতের দখলে।

আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে মিল রেখে প্রতি মাসে এলপিজির মূল্য নির্ধারণ করা হলেও ব্যবসায়ীরা ভোক্তার কাছ থেকে ইচ্ছেমত বাড়তি অর্থ আদায় করছেন, এমন অভিযোগের বিষয়টি জানতে চাইলে বিইআরসি চেয়ারম্যানের বক্তব্য হচ্ছে, সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ব্যাপারে তদারকি করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বেশ কিছু প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে।

পাইপলাইনের গ্যাসের সংকটে এলপি গ্যাস দেশ জুড়ে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। বিশেষ করে ঢাকা-চট্টগ্রামের মতো বড় শহরগুলোতে অনেক বাসায় এলপিজি নিত্যপণ্য হয়ে উঠেছে। বিইআরসি প্রতি মাসের শুরুতে এলপিজির দাম নির্ধারণ করে দেয়।

পোস্টটি শেয়ার করুন

Facebook
WhatsApp
X
LinkedIn