২১ মে ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ, নিরাপত্তা জোরদারে ৭ সিদ্ধান্ত

সমাজকাল প্রতিবেদক, ঢাকা

রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যান থেকে অবৈধ ভ্রাম্যমাণ দোকান ও স্থাপনা উচ্ছেদে অভিযান শুরু করেছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)। আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকে শুরু হওয়া এ অভিযানে শতাধিক অবৈধ দোকান গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এ সময় চারটি বুলডোজার ব্যবহার করা হয় এবং বিপুল সংখ্যক পুলিশ সদস্য现场 নিরাপত্তা নিশ্চিত করেন।

অভিযানটি পরিচালনা করছেন ডিএসসিসির নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. আমিনুল ইসলাম। তার সঙ্গে ছিলেন গণপূর্ত অধিদপ্তর, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, শাহবাগ থানা-পুলিশ এবং আনসার সদস্যরা। অভিযানের সময় উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত এস্টেট ম্যানেজার ফাতেমা বিনতে মুস্তাফা।

শাহরিয়ার হত্যার পর দ্রুত পদক্ষেপ

এই অভিযান শুরু হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শাহরিয়ার আলম সাম্যের হত্যাকাণ্ডের পর। গত মঙ্গলবার দিবাগত রাতে দুর্বৃত্তের ছুরিকাঘাতে উদ্যানের মুক্তমঞ্চের পাশে নিহত হন শাহরিয়ার। এরপর থেকেই উদ্যানে নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে উঠতে থাকে তীব্র সমালোচনা। ছাত্রদলসহ বিভিন্ন ছাত্রসংগঠন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নয়নের দাবি জানায়।

দোকানিদের ক্ষোভ

অভিযানে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ভ্রাম্যমাণ দোকানিরা। তাদের দাবি, অপরাধ করেছে বাইরের লোকজন, অথচ উচ্ছেদে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে তাদের মতো নিরীহ দোকানিরা। দোকানি রনি মিয়া বলেন, “এই দোকান দিয়েই তো সংসার চলে। আমরা তো কোনো অপরাধ করিনি।”

সাত দফা সিদ্ধান্তে কঠোর নজরদারি

গতকাল রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট সংস্থার বৈঠকে উদ্যান ব্যবস্থাপনা ও নিরাপত্তা জোরদারে সাতটি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব তাঁর ফেসবুকে এ সিদ্ধান্তগুলো জানান। সিদ্ধান্তগুলো হলো:

১. টিএসসি-সংলগ্ন ফটক স্থায়ীভাবে বন্ধ রাখা।
২. উদ্যানে অবৈধ দোকান, মাদক ব্যবসা বন্ধে যৌথ অভিযান।
৩. নিয়মিত নজরদারিতে অংশীজনদের নিয়ে কমিটি গঠন।
৪. সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন ও নিয়মিত পর্যবেক্ষণ।
৫. উদ্যানে ডেডিকেটেড পুলিশ বক্স স্থাপন।
৬. রমনা পার্কের মতো সুশৃঙ্খল ব্যবস্থাপনা চালু।
৭. রাত ৮টার পর জনসাধারণের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রতিক্রিয়া

ঢাবির এস্টেট ম্যানেজার ফাতেমা বিনতে মুস্তাফা বলেন, “আমরা বিভিন্ন সংস্থার সমন্বয়ে কাজ করছি যাতে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিত করা যায়। এ জন্য সবার সহযোগিতা প্রয়োজন।”