২২ মে ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সমাজকাল ডেস্ক

বলিউড তারকা দীপিকা পাড়ুকোন বরাবরই তার সাহসী ব্যক্তিত্ব, স্পষ্টভাষিতা এবং বাস্তব জীবনের লড়াইকে সম্মানের সঙ্গে গ্রহণ করার জন্য প্রশংসিত। এবার নিজের মাতৃত্বকালীন অভিজ্ঞতা নিয়েই মুখ খুললেন তিনি। একটি সাম্প্রতিক সাক্ষাৎকারে দীপিকা অকপটে স্বীকার করেছেন, গর্ভাবস্থার শেষ তিন মাস ছিল তাঁর জীবনের অন্যতম কঠিন সময়।

‘পাঁজরের যন্ত্রণা ছিল সবচেয়ে তীব্র’
দীপিকা বলেন, ‘‘হঠাৎ করে শরীরের এমন সব অঙ্গের কথা জানতে পারলাম যেগুলোর অস্তিত্ব আমি আগে বুঝতেই পারিনি। কারণ সেগুলোতে ব্যথা শুরু হয়েছিল। বিশেষ করে পাঁজরের ব্যথাটা ছিল ভয়ানক।’’

তিনি জানান, সে সময় তিনি নিয়মিত যোগাভ্যাস করতেন। কিন্তু ব্যথা এবং অস্বস্তির কারণে তাঁর দৈনন্দিন জীবনযাত্রায় তীব্র পরিবর্তন আসে। তবু নিজের শরীর ও সন্তানের নিরাপত্তা রক্ষায় এক ইঞ্চিও ছাড় দেননি তিনি।

মাতৃত্ব নিয়ে নিন্দা এবং ব্যক্তিত্বের জবাব
যখন দীপিকার গর্ভাবস্থাকে ঘিরে শুরু হয় নানা রকম জল্পনা—কারও মতে, তাঁর ‘বেবি বাম্প’ ছিল কৃত্রিম, কেউ বলেন, সবটাই নাকি ‘পাবলিসিটি স্টান্ট’। তখন দীপিকা স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে এসব অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে নিজের যাত্রাপথে অটল থাকেন।

বলিউডে নারী অভিনেত্রীদের মা হওয়ার পর ক্যারিয়ারে কী প্রভাব পড়ে, তা নিয়ে বরাবরই বিতর্ক রয়েছে। দীপিকা নিজেও জানিয়েছেন, সন্তান জন্মের পর পুনরায় পুরনো ছন্দে ফিরতে তাঁর সময় লাগছে। তবে তিনি এটাও বলেছেন, ‘‘আমি আগে মা, পরে অভিনেত্রী। এখন সন্তানের সঙ্গে সময় কাটানোই আমার কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।’’

ফিটনেস ও সুস্থতা ফিরে পাওয়ার লড়াই
সন্তান জন্মের পর দীপিকা শুধুই ওজন কমানোর দিকে মনোযোগ দেননি। তাঁর লক্ষ্য ছিল শারীরিক শক্তি পুনরুদ্ধার। তিনি সাঁতার, কার্ডিয়ো, স্ট্রেচিং ও নিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাস মেনে চলেছেন। এই পর্যায়ে তাঁর ফিটনেস রুটিন ছিল ধৈর্য ও আত্মসমর্পণের এক বড় উদাহরণ।

এক নতুন দীপিকা
মাতৃত্ব দীপিকাকে কেবল শারীরিকভাবেই নয়, মানসিকভাবেও আরও পরিণত করেছে। তিনি বলেন, ‘‘এই সময়টা আমাকে আরও নম্র করেছে। আমি জীবনকে অন্যভাবে দেখছি। আমার মধ্যে একজন নতুন আমি জন্ম নিয়েছে।’’

বর্তমানে তিনি অভিনয়জগৎ থেকে সাময়িক বিরতিতে থাকলেও, তাঁর ভক্তরা অপেক্ষা করছেন কবে আবার রুপালি পর্দায় ফিরে আসবেন ‘পিকু’ বা ‘গেহরাইয়াঁ’-র দীপিকা।

মা হিসেবে তারকা হওয়া এক জটিল সমীকরণ
আজকের দিনে দাঁড়িয়ে দীপিকার অভিজ্ঞতা অসংখ্য নারীর জন্য এক অনুপ্রেরণা। তিনি প্রমাণ করলেন, মাতৃত্ব কোনো বাধা নয়—বরং নারীর শক্তি ও সক্ষমতার নতুন এক দিগন্ত।