২৩ মে ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
July

জুলাই গণঅভ্যুত্থান : শহীদ পরিবার ও গুরুতর আহতদের জন্য রাজধানীতে ফ্ল্যাট বরাদ্দের উদ্যোগ

বিশেষ প্রতিবেদন :

২০২৪ সালের ঐতিহাসিক জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ পরিবার ও চূড়ান্তভাবে অক্ষম আহতদের পুনর্বাসনের লক্ষ্যে রাজধানীতে ফ্ল্যাট দেওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার। এই উদ্যোগ বাস্তবায়নে রাজধানীর মিরপুর এলাকায় দুটি আবাসন প্রকল্প গ্রহণের কাজ এগিয়ে চলেছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ।

গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, শহীদ পরিবারদের জন্য ১২৫০ বর্গফুট এবং অতি গুরুতর আহতদের জন্য ১০০০ বর্গফুট আয়তনের ফ্ল্যাট বরাদ্দ দেওয়া হবে। মিরপুর-১৪ নম্বর সেক্টরে পুলিশ স্টাফ কলেজের উল্টো দিকে একটি প্রকল্প এবং মিরপুর-৯ এ পল্লবী থানার পেছনে আরেকটি প্রকল্প নেওয়ার কথা রয়েছে। আগামী দুই বছরের মধ্যে প্রকল্পগুলো শেষ করার লক্ষ্যে কাজ এগিয়ে যাচ্ছে।

প্রকল্প এলাকায় আধুনিক নাগরিক সুবিধাসহ গ্যাস, পানি, বিদ্যুৎ, সড়ক, মসজিদ, স্কুল, কমিউনিটি সেন্টার ও বাজার স্থাপন করা হবে। ইতিমধ্যে আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠকে এসব সুবিধা নিশ্চিত করার জন্য পরিকল্পনা চূড়ান্ত হয়েছে।

উল্লেখ্য, গত বছরের জুলাই-আগস্টে দেশের ইতিহাসের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে শত শত মানুষ শহীদ হন এবং কয়েক হাজার আহত হন। আন্দোলনের চূড়ান্ত পরিণতিতে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ করে দেশত্যাগ করেন।

আন্দোলনের শহীদদের সম্মাননা ও আহতদের চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের লক্ষ্যে সরকার একাধিক নীতিমালা বাস্তবায়ন করছে। ইতিমধ্যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ৮৩৪ জন শহীদের তালিকা এবং ক-ক্যাটাগরির ৪৯৩ জন গুরুতর আহতদের তালিকা গেজেট আকারে প্রকাশ করেছে। আহতদের তিন শ্রেণিতে বিভক্ত করা হয়েছে—‘ক’ (অতি গুরুতর), ‘খ’ (একটি অঙ্গহানি) এবং ‘গ’ (সামান্য আহত)।

শহীদ ও আহতদের জন্য নির্ধারিত সুবিধাসমূহ:

‘ক’ শ্রেণির আহতরা:

  • এককালীন ৫ লক্ষ টাকা
  • প্রতি মাসে ২০ হাজার টাকা ভাতা
  • আজীবন চিকিৎসা সুবিধা
  • সরকারি ফ্ল্যাট বরাদ্দ

‘খ’ শ্রেণির আহতরা:

  • এককালীন ৩ লক্ষ টাকা
  • প্রতি মাসে ১৫ হাজার টাকা ভাতা
  • আজীবন চিকিৎসা সুবিধা

‘গ’ শ্রেণির আহতরা:

  • চিকিৎসা পরবর্তী চাকরিতে অগ্রাধিকার
  • পুনর্বাসন কর্মসূচিতে অগ্রাধিকার
  • কোনও আর্থিক ভাতা নয়

 

সরকারি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, প্রকল্পটির বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার অনুমোদন নেওয়া হবে এবং এরপর বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করা হবে। শহীদ পরিবার এবং আহতদের প্রতি সর্বোচ্চ সম্মান জানাতেই এই উদ্যোগ—এমনটি জানিয়েছেন প্রকল্প সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা।