ঘোষিত নিরাপদ অঞ্চলে ইসরায়েলি হামলা , ৭১ ফিলিস্তিনি নিহত
সমাজকাল ডেস্ক :
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় চলমান যুদ্ধে নিরাপদ অঞ্চল হিসেবে ঘোষণা দেওয়া আল-মাওয়াসি এলাকায় প্রাণঘাতী বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। শনিবার (১৩ জুলাই) ইসরায়েলের এই হামলায় সেখানে অন্তত ৭১ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
হামলায় আরও ২৮৯ জনের বেশি আহত হয়েছে বলে গাজার হামাস নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী বলেছে, আল-মাওয়াসিতে হামাসের জ্যেষ্ঠ নেতাদের লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালানো হয়েছে।
হামাস বলেছে, খান ইউনিসের কাছে আল-মাওয়াসি এলাকায় বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী ওই এলাকাটিকে মানবিক অঞ্চল হিসেবে ঘোষণা দিয়ে ফিলিস্তিনিদের সেখানে আশ্রয় নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছিল।
ইসরায়েলি একজন কর্মকর্তা বলেছেন, হামাসের সামরিক শাখার প্রধান মোহাম্মদ দেইফকে লক্ষ্য করে আল-মাওয়াসির এক উন্মুক্ত এলাকায় হামলা করা হয়েছে। ওই এলাকায় কেবল হামাসের সদস্যরা ছিলেন। সেখানে কোনও বেসামরিক লোকজন ছিলেন না।
খান ইউনিসে হামাসের কমান্ডার রাফা সালামাকেও এই হামলার লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছিল। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে সেখানে হামলা চালানো হয়েছে বলে দাবি করেছেন ওই কর্মকর্তা।
তবে নেতাদের লক্ষ্যবস্তু করার ইসরায়েলি দাবিকে মিথ্যা বলে অভিহিত করেছে হামাস। এক বিবৃতিতে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী এই গোষ্ঠী বলেছে, ফিলিস্তিনি নেতাদের লক্ষ্যবস্তু করার ইসরায়েলি দাবি এটাই প্রথম নয়। অতীতেও তাদের এমন দাবি অসংখ্যবার মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে।
স্থানটি দেখে মনে হয়, বড় ধরণের ভূমিকম্প হয়েছে
আল-মাওয়াসির একজন প্রত্যক্ষদর্শী বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, হামলার স্থানটি দেখে মনে হচ্ছে সেখানে বড় ধরনের ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে।
হামাসের একজন কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেছেন, ঘোষিত নিরাপদ অঞ্চলে ইসরায়েলি বাহিনীর এই হামলা উত্তেজনার গুরুতর বৃদ্ধি। এর মাধ্যমে ইসরায়েল যে যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে পৌঁছাতে আগ্রহী নয়, সেটি পরিষ্কার।
হামাসের সামরিক শাখা আল-কাসাম ব্রিগেডের প্রধান মোহাম্মাদ দেইফ ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর অন্যতম প্রধান টার্গেট। বন্দিদশা থেকে পালিয়ে এবং একাধিক হত্যাচেষ্টা থেকে বেঁচে ফেরা দেইফের অবস্থান ঘিরে ইসরায়েলি বাহিনীর মাঝে ধোঁয়াশা রয়েছে। গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে ঢুকে হামলা চালানোর অন্যতম পরিকল্পনাকারী হিসেবে মনে করা হয় তাকে। ওই দিন ইসরায়েলে এক হাজার ২০০ জনকে হত্যা ও আরও ২৫১ জনকে ধরে নিয়ে গাজায় জিম্মি করে হামাস। পরে সেদিনই গাজায় সর্বাত্মক যুদ্ধ শুরু করে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী। গত ৯ মাস ধরে চলা ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধে গাজা উপত্যকায় ৩৮ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনির প্রাণহানি ঘটেছে।