ইশরাকের দাবি রাজনৈতিক কারণেই শপথ পড়ানো হচ্ছে না, ডিএসসিসি মেয়রপ্রার্থী ইশরাকের নগর ভবনে অবস্থান কর্মসূচি অব্যাহত
নিজস্ব প্রতিবেদক :
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র পদে জয়ী হলেও এখনো শপথ নিতে পারেননি বিএনপি নেতা ও প্রকৌশলী ইশরাক হোসেন। এ বিষয়ে তিনি দাবি করেছেন, “রাজনৈতিক কারণেই আমাকে শপথ পড়ানো হচ্ছে না”। রোববার (১৫ জুন) নগর ভবনে এক গণঅবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন।
সাবেক মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকনের স্থলাভিষিক্ত হিসেবে বিএনপি-সমর্থিত প্রার্থী ইশরাক হোসেন গত উপনির্বাচনে ডিএসসিসির মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে বিজয়ী হন। তবে নির্বাচন-পরবর্তী দীর্ঘ সময় পার হলেও সরকারিভাবে তাঁর শপথ অনুষ্ঠান কার্যকর করা হয়নি, যা নিয়ে শুরু থেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করে আসছেন তিনি।
নগর ভবনে গণঅবস্থান কর্মসূচি
আজকের কর্মসূচিতে ইশরাক বলেন,“আদালতের রায় অনুযায়ী আমি বৈধভাবে নির্বাচিত হয়েছি। স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজব ভূঁইয়া ইচ্ছাকৃতভাবে আদালতের রায় অমান্য করে শপথ প্রক্রিয়া বিলম্বিত করছেন। এটি সংবিধান এবং জনপ্রশাসনবিরোধী পদক্ষেপ।”
তিনি এ পরিস্থিতির দ্রুত সমাধানে প্রধান উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
জরুরি সেবা ব্যতীত অন্য কার্যক্রম বন্ধের ঘোষণা
গণঅবস্থানে তিনি আরও বলেন,“শপথ না পড়ানো পর্যন্ত আমাদের শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচি চলবে। জনগণের দৈনন্দিন কাজ—যেমন পানিসংকট, ময়লা অপসারণ, স্যানিটেশন—এই জরুরি সেবাগুলো আমাদের তত্ত্বাবধানে চলবে। তবে অন্য সব কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। কোনো কর্মকর্তা জরুরি সেবার বাইরে অফিসে উপস্থিত হলে তাকে গণপ্রতিরোধ করা হবে।”
দীর্ঘদিনের আইনি ও প্রশাসনিক জটিলতা
উল্লেখ্য, নির্বাচনে জয়লাভের পরও ইশরাক হোসেনের শপথ অনুষ্ঠানে বারবার বিলম্ব ঘটে। নির্বাচন কমিশন আনুষ্ঠানিকভাবে ফল প্রকাশ করলেও স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন ছাড়া শপথের ব্যবস্থা হয়নি। এ নিয়ে আদালত একাধিকবার নির্দেশনা দিলেও তা বাস্তবায়নে গড়িমসি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ বিএনপি ও সংশ্লিষ্ট মহলের।
রাজনৈতিক প্রতিহিংসার অভিযোগ
বিএনপি নেতাদের অভিযোগ, সরকার প্রশাসনিক ক্ষমতার অপব্যবহার করে “রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতে” ইশরাকের শপথ আটকে রেখেছে।
এই বিষয়ে ইশরাক বলেন,“যে সরকার নিজেরাই আদালতের নির্দেশ মানে না, তারা কীভাবে গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে?”
ইশরাকের অবস্থান ও দলের বার্তা
ইশরাক হোসেন বলেন,“আমি জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়েছি। সংবিধান আমাকে দায়িত্ব পালনের অধিকার দিয়েছে। সরকারের দায়িত্ব তা কার্যকর করা। আমি কোনোভাবেই পিছু হটবো না।”
এই অবস্থান কর্মসূচিকে ঘিরে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা একাত্মতা প্রকাশ করেছেন। দলের স্থায়ী কমিটির সদস্যরা বলছেন, “এটি একটি পরীক্ষার ক্ষেত্র। সরকার যদি জনগণের ম্যান্ডেটকে অগ্রাহ্য করে, তা হলে দেশব্যাপী বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।”
ডিএসসিসির মেয়রপদে জয়ী হয়েও শপথ নিতে পারছেন না ইশরাক হোসেন। নগর ভবনে অবস্থান নিয়ে বললেন, “রাজনৈতিক কারণে আমাকে শপথ পড়ানো হচ্ছে না।”