ইরানে হামলা নিয়ে মুখ খুললেন ট্রাম্প, বললেন ‘আমি জানতাম’, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানে ইসরায়েলের সামরিক অভিযানের বিষয়ে মুখ খুলেছেন ইসরায়েলের অভিযানে সমর্থন, কূটনৈতিক সমাধানে ইচ্ছা প্রকাশ; তেহরানে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি, নিহত ৭৮
সমাজকাল ডেস্ক :
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানে ইসরায়েলের সামরিক অভিযানের বিষয়ে মুখ খুলেছেন। তিনি জানিয়েছেন, হামলার বিষয়টি আগেই জানতেন তিনি। লন্ডনে রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন, “আমি ইরানকে অপমান ও ধ্বংসের হাত থেকে বাঁচাতে চেয়েছিলাম। আমি চেয়েছিলাম একটা চুক্তি হোক।”
ট্রাম্প দাবি করেন, এখনও আলোচনার সুযোগ রয়েছে। তিনি বলেন, “এখনো দেরি হয়নি।” তিনি জানান, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুকে হামলা পিছিয়ে দিতে বলেছিলেন যাতে কূটনৈতিকভাবে পারমাণবিক সংকটের সমাধান সম্ভব হয়। তবে আলোচনায় ব্যর্থ হলে তিনি ইরানকে সামরিক জবাবের হুমকিও দিয়েছিলেন।
‘চমৎকার ও সফল হামলা’
ডোনাল্ড ট্রাম্প ইসরায়েলের সামরিক অভিযানে পূর্ণ সমর্থন জানিয়ে বলেন, “হামলাটি চমৎকার ও অত্যন্ত সফল ছিল। এটি আমার কৌশলের অংশ।”
তবে প্রশ্ন উঠেছে, এই হামলার ফলে মধ্যপ্রাচ্যে পূর্ণমাত্রার যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়তে পারে কি না। ট্রাম্প এ বিষয়ে মন্তব্য এড়িয়ে গেলেও জানান, “আমরা ইসরায়েলের সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ মিত্র। দেখা যাক, কী হয়।”
যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তায় ইসরায়েল
দুই মার্কিন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ইরানের পাল্টা ক্ষেপণাস্ত্র হামলা প্রতিহত করতে ইসরায়েলকে প্রযুক্তিগত সহায়তা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
ইসরায়েলের পক্ষ থেকে হামলার নাম দেওয়া হয়েছে “অপারেশন রাইজিং লায়ন”। নেতানিয়াহু বলেন, “ইরানের পারমাণবিক সক্ষমতা আমাদের অস্তিত্বের জন্য হুমকি। যতদিন এ হুমকি থাকবে, ততদিন আমাদের অভিযান চলবে।”
মরণঘাতী রাত
গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত সাড়ে তিনটার দিকে ইরানে শুরু হয় ইসরায়েলের একযোগে বিমান হামলা। দেশটির তেহরান, নাতাঞ্জ, তাবরিজ, ফোরদোসহ অন্তত আটটি শহরে ২০০টিরও বেশি যুদ্ধবিমান অংশ নেয়। ইসরায়েলের দাবি, শতাধিক লক্ষ্যবস্তুতে সফলভাবে আঘাত হানা হয়েছে।
ইরানের সরকারি সংবাদমাধ্যম জানায়, এই হামলায় ৭৮ জন নিহত হয়েছেন, যাঁদের মধ্যে ছয়জন পরমাণুবিজ্ঞানী। আহত হয়েছেন অন্তত ৩২৯ জন। দেশটির উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের তাবরিজ শহর এবং ফোরদো পারমাণবিক স্থাপনাতেও বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে।
পাল্টা জবাব ও উত্তেজনা
ইসরায়েলের হামলার পর পাল্টা ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে ইরান। তেল আবিবে বিস্ফোরণ ও ধোঁয়ার কুণ্ডলী দেখা গেছে বলে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধের আশঙ্কা আরও জোরালো হচ্ছে। বিশ্বনেতারা সংযম দেখাতে আহ্বান জানালেও, ইসরায়েল ও ইরান উভয়েই আপাতত সংঘাত থেকে পিছিয়ে আসার লক্ষণ দেখায়নি।