২৭ এপ্রিল : আজ যাঁদের হারিয়েছি

সমাজকাল ডেস্ক

আজ রবিবার, ২৭ এপ্রিল। গ্রেগরীয় পঞ্জিকার ১১৭তম দিন। বছর শেষ হতে বাকি আরও ২৪৮ দিন। প্রতিটি দিনই ইতিহাসে নানা স্মৃতি বহন করে আনে, আর কিছু দিন এমনও থাকে যেগুলো বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে—কারণ, সেদিন হারিয়ে যান কিছু অনন্য প্রতিভা। তাঁদের কৃতিত্ব ও কর্মই আমাদের সমাজ, সংস্কৃতি এবং সভ্যতাকে করেছে ঋদ্ধ ও প্রগতিশীল। আজকের দিনে তাঁদের স্মরণ করা মানে শুধু ইতিহাসের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো নয়, বরং নিজেদের ভবিষ্যৎ নির্মাণের পথও খুঁজে নেওয়া। সমাজকাল পরিবারের পক্ষ থেকে আজ আমরা স্মরণ করছি এমনই কিছু শ্রদ্ধেয় প্রয়াত গুণীকে, যাঁরা ২৭ এপ্রিল তাঁর আপন কর্মজীবনের শেষে চিরবিদায় নিয়েছেন।

🔹 রালফ ওয়াল্ডো এমারসন (১৮০৩–১৮৮২)
উনিশ শতকের অন্যতম প্রভাবশালী মার্কিন দার্শনিক, প্রাবন্ধিক ও কবি রালফ ওয়াল্ডো এমারসন ১৮৮২ সালের এই দিনে প্রয়াত হন। তিনি ছিলেন ট্রান্সসেন্ডেন্টালিস্ট আন্দোলনের মুখ্য ভাবুক, যাঁর লেখায় আত্মনির্ভরতা, স্বাধীনতা ও প্রকৃতির প্রতি আকর্ষণ ছিল কেন্দ্রীয় ভাবনা। তাঁর ‘Self-Reliance’ প্রবন্ধটি আজও আত্মোন্নয়ন ও ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্যের প্রতীক হয়ে আছে।

🔹 আলেকজান্ডার সৃলজেনিৎসিন (১৯১৮–১৯৯৪)
সোভিয়েত ইউনিয়নের অধীনে মানুষের উপর নিপীড়নের কাহিনি যিনি বিশ্ববাসীর সামনে তুলে ধরেছিলেন সাহসিকতার সঙ্গে, তিনি আলেকজান্ডার সৃলজেনিৎসিন। ১৯৯৪ সালের ২৭ এপ্রিল মৃত্যুবরণ করেন এই রুশ ঔপন্যাসিক। তাঁর ‘The Gulag Archipelago’ বইটি শুধু সাহিত্যকর্ম নয়, বরং ইতিহাসের দলিল, যা বহু মানুষের চেতনায় আলোড়ন তুলেছিল।

🔹 সেসার চাভেজ (১৯২৭–১৯৯৩)
মার্কিন কৃষিশ্রমিক ও লাতিনো অধিকার আন্দোলনের পথিকৃৎ সেসার চাভেজ ১৯৯৩ সালের এই দিনে মৃত্যুবরণ করেন। অহিংস পন্থায় শ্রমিকদের অধিকারের জন্য লড়াই করে তিনি সামাজিক ন্যায়ের প্রতীক হয়ে ওঠেন। “Sí, se puede”—এই স্লোগান আজও তাঁর সংগ্রামের প্রতিধ্বনি বহন করে।

🔹 কেভিন মুর (১৯৫৫–২০০২)
আধুনিক জ্যাজ ও ফিউশন সংগীতের অনন্য প্রতিভা কেভিন মুর, যিনি ‘Return to Forever’ ব্যান্ডের অন্যতম সদস্য ছিলেন, ২০০২ সালের ২৭ এপ্রিল প্রয়াত হন। তাঁর সুর ও কম্পোজিশনে জ্যাজ পেয়েছিল নতুন এক ব্যঞ্জনা।

🔹 তামিম আনসারি (১৯৪৯–২০০৮)
আফগান বংশোদ্ভূত মার্কিন লেখক তামিম আনসারি ২০০৮ সালে এই দিনে মৃত্যুবরণ করেন। তাঁর স্মৃতিকথা West of Kabul, East of New York উপসাগরীয় যুদ্ধ ও মুসলিম পরিচয় প্রসঙ্গে পশ্চিমা পাঠকদের একটি নতুন উপলব্ধির দিগন্ত খুলে দিয়েছিল।

আজ যাঁদের হারিয়েছি, তাঁরা কেউ ছিলেন সমাজচিন্তার বাতিঘর, কেউ শিল্পের ধারক, কেউ আবার রাজনীতির জননেতা। তাঁদের স্মরণ করে আমরা তাঁদের উত্তরাধিকারের প্রতি সম্মান জানাই। ইতিহাসকে মনে রাখা শুধু অতীতকে জানার জন্য নয়, বরং বর্তমানকে গভীরভাবে অনুধাবনের একটি প্রয়োজনীয় দিক। সমাজকাল তাঁদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা জ্ঞাপন করছে।