স্বচ্ছতার স্বার্থে মতভেদও জানানো হবে : আলী রীয়াজ। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেছেন, স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে যেসব বিষয়ে মতভেদ রয়েছে, সেগুলোও জনসমক্ষে আনা হবে। কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটে সুশীল সমাজের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় তিনি এই বার্তা দেন।
সমাজকাল প্রতিবেদক :
রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনায় যেসব বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে, তা যেমন জানানো হবে, তেমনি যেসব বিষয়ে এখনও মতভেদ রয়েছে, সেগুলোও জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে—স্বচ্ছতা বজায় রাখতেই এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ।
রোববার (২৫ মে) রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটে সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
সভায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্য হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ড. বদিউল আলম মজুমদার, সফর রাজ হোসেন, ড. ইফতেখারুজ্জামান, ড. মো. আইয়ুব মিয়া এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার।
আলী রীয়াজ বলেন, “ঐকমত্য প্রতিষ্ঠায় কেবল রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা যথেষ্ট নয়। নাগরিক সমাজকে সম্পৃক্ত না করলে কাঠামোগত পরিবর্তনের অগ্রগতি সম্ভব নয়।”
তিনি জানান, কমিশনের ছয় মাস মেয়াদের প্রায় অর্ধেক সময় পার হয়ে গেছে। এরই মধ্যে ৩৩টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপ হয়েছে। তাদের দেওয়া মতামত ও প্রস্তাবনাগুলো বিশ্লেষণ করে প্রাথমিক প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে, যা পর্যায়ক্রমে প্রকাশিত হবে।
সভায় বক্তারা মানবাধিকার, নারী অধিকার, জাতিসত্তার অধিকার এবং প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর অধিকারের প্রশ্নে জাতীয় ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন। তারা বলেন, জুলাই-অগাস্ট অভ্যুত্থানের পর নারীদের রাজনীতিতে অংশগ্রহণের আগ্রহ বৃদ্ধি পেয়েছে, যা রাষ্ট্রগঠনের জন্য এক নতুন আশার দিকচিহ্ন।
জাতীয় সনদের মাধ্যমে এই ঐকমত্য প্রতিফলিত হবে—এমন প্রত্যাশা ব্যক্ত করে বক্তারা বলেন, “ভবিষ্যতের সব রাজনৈতিক দল যেন এই সনদের মূলনীতি ও অঙ্গীকার বাস্তবায়নের লক্ষ্যে কাজ করে, সেটি নিশ্চিত করতে হবে।”
সভার অন্যান্য বক্তাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সাবেক বিচারপতি আব্দুল মতিন, মেজর জেনারেল (অব.) আ ন ম মনীরুজ্জামান, ড. ওয়ারেসুল করিম, ড. মির্জা হাসান, ড. গীতি আরা নাসরিন, ড. সামিনা লুৎফা, সুলতানা রাজিয়া, সাংবাদিক বাসুদেব ধর, ইলিরা দেওয়ান, আশরাফুন নাহার মিষ্টি এবং চৌধুরী সামিউল হক।
শেষে অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, “আমরা একটা ঐতিহাসিক মুহূর্তে দাঁড়িয়ে আছি। এই সুযোগ যদি হাতছাড়া হয়, তাহলে আগামী প্রজন্ম আমাদের ক্ষমা করবে না। আত্মত্যাগের যে ইতিহাস আমাদের আছে, সেই রক্তের কাছে আমাদের দায়বদ্ধতা রয়েছে।”