সমাজকাল প্রতিবেদক :
সাম্য হত্যার প্রতিবাদে উত্তাল শাহবাগ-ইন্টারকন্টিনেন্টাল, উপদেষ্টাদের পদত্যাগ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা ইশরাকের
রাজধানীর শাহবাগ মোড় ও ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেল এলাকায় বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই উত্তপ্ত পরিস্থিতি বিরাজ করছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদল নেতা শাহরিয়ার আলম সাম্য হত্যার বিচার দাবিতে সকাল ৯টা থেকে দুই এলাকায় অবস্থান কর্মসূচি পালন করছে ছাত্রদলের বিভিন্ন শাখার শত শত নেতা-কর্মী।
এদিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দুই ছাত্র প্রতিনিধি উপদেষ্টার পদত্যাগ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন সদ্য মেয়র হিসেবে শপথ নিতে অনুমোদন পাওয়া বিএনপি নেতা ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন। দুপুর ১টার দিকে তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে তিনি লেখেন,
“এইসব মূলা দিয়ে গাধা বশ করা যায়, আমাদের না। দুই ছাত্র প্রতিনিধি উপদেষ্টার পদত্যাগের খবর না আসা পর্যন্ত চলেছে লড়াই, চলবে। রাস্তা তো ছাড়বেন না, আরও বিস্তৃত করতে হবে।”
ছাত্রদলের এই আন্দোলন ঘিরে শাহবাগ ও ইন্টারকন্টিনেন্টাল মোড় এলাকায় যান চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায়। কর্মসূচির প্রভাবে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোতে তীব্র যানজট দেখা দিয়েছে। ঢাকার বিভিন্ন কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অংশগ্রহণকারীরা ‘বিচার চাই, বিচার চাই’, ‘আমার ভাই কবরে, খুনি কেন বাইরে’, ‘আসিফের পদত্যাগ, ঢাকাবাসীর দাবি এক’ প্রভৃতি স্লোগানে মুখর করে তুলেছেন শহর।
ছাত্রদলের দাবি, হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার এবং দৃশ্যমান বিচারের আশ্বাস না পাওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। আন্দোলনকারীরা সরকারের স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া এবং তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের পদত্যাগের দাবি জোরালো করেছেন।
ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম বলেছেন,
“সাম্য হত্যাকাণ্ডের বিচার না হওয়া পর্যন্ত আমরা ঘরে ফিরব না। খুনিদের গ্রেপ্তার না করলে আরও কঠোর কর্মসূচি আসবে।”
এদিকে হাইকোর্ট বৃহস্পতিবার বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে মেয়র হিসেবে শপথ নিতে বাধা নেই বলে রায় দেয়। এই রায়ের খবর পাওয়ার পর কাকরাইল মসজিদ মোড়ে অবস্থানকারী ইশরাকের সমর্থকরা আনন্দ-উল্লাসে মেতে ওঠেন এবং একইসঙ্গে দুই উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবিতে আরও সোচ্চার হন।
দীর্ঘ সময় সড়কে আটকে থাকায় ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ পথচারীরা। কেউ হাঁটছেন কিলোমিটারজুড়ে, কেউ নিরাশ হয়ে গন্তব্য পরিবর্তন করছেন। চাঁদপুর থেকে আসা নবীর হোসেন জানান,
“রিকশাও পাচ্ছি না, বাস তো দূরের কথা। হেঁটেই যেতে হবে।”
মুন্সিগঞ্জের শ্যামল বিশ্বাস বলেন,
“এতো বড় অবরোধ জানলে বিকল্প পথ নিতাম। এখন গুলিস্তান পর্যন্ত হেঁটে যেতে হবে।”
ছাত্রদল জানায়, বিকেল ৫টা পর্যন্ত কর্মসূচি চলবে। তবে দাবিগুলোর বাস্তবায়ন না হলে পরবর্তী কর্মসূচিতে রাজধানী অচল করে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে সংগঠনটি।