১৫ মে ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সঞ্চয়পত্র কেনায় রিটার্ন জমার প্রমাণ দেখানোর বাধ্যবাধকতা থাকছে না

সমাজকাল প্রতিবেদক
সঞ্চয়পত্র কেনার ক্ষেত্রে আয়কর রিটার্ন জমার প্রমাণ (পিএসআর) দেখানোর বাধ্যবাধকতা তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে সরকার। বিষয়টি আগামী ২০২৫–২৬ অর্থবছরের বাজেটে অন্তর্ভুক্ত হতে পারে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

বর্তমানে পাঁচ লাখ টাকার বেশি সঞ্চয়পত্র কিনতে গেলে আগের বছরের আয়কর রিটার্ন জমার প্রমাণ দেখাতে হয়। তবে এই নিয়মে সীমিত ও মধ্যম আয়ের মানুষ নানা ভোগান্তিতে পড়েন। তাঁদের অনেকের করযোগ্য আয় না থাকলেও শুধুমাত্র সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগের কারণে রিটার্ন দিতে হয়।

অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ আগামী ২ জুন জাতির উদ্দেশে বাজেট বক্তৃতায় এই বাধ্যবাধকতা শিথিল করার ঘোষণা দিতে পারেন বলে জানা গেছে। এবারে সংসদ না থাকায় বাজেট দেওয়া হবে টেলিভিশন বক্তৃতার মাধ্যমে।

নতুন প্রস্তাবে হয়তো নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে সঞ্চয়পত্র কিনতে রিটার্নের প্রমাণপত্র লাগবে না। শুধু কর শনাক্তকরণ নম্বর (টিআইএন) থাকলেই সঞ্চয়পত্র কেনা যাবে। অর্থ মন্ত্রণালয় ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এমন পরিবর্তনের বিষয়ে ইতিবাচক মনোভাব দেখিয়েছে।

বর্তমানে জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তরের অধীনে চার ধরনের সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়—পাঁচ বছর মেয়াদি বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্র, তিন মাস অন্তর মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্র, পরিবার সঞ্চয়পত্র এবং পেনশনার সঞ্চয়পত্র। এর মধ্যে ‘পরিবার সঞ্চয়পত্র’–এর চাহিদা সবচেয়ে বেশি, যা শুধু নারীরা কিনতে পারেন।

এদিকে, এনবিআরের এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, এ বছর ১৬ লাখ করদাতা অনলাইনে রিটার্ন জমা দিয়েছেন, যার দুই-তৃতীয়াংশই শূন্য রিটার্ন। বিশেষজ্ঞদের মতে, অনেকেই শুধুমাত্র পিএসআর দেখাতে গিয়ে শূন্য রিটার্ন দাখিল করেন, যা বাস্তব করনীতি ও রাজস্ব আহরণের উদ্দেশ্যের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।

সরকারি-বেসরকারি ৪৫টি সেবার ক্ষেত্রে রিটার্ন জমার প্রমাণপত্র (পিএসআর) চাওয়া হয়। তবে এই বিধান শিথিল হলে সাধারণ মানুষের সঞ্চয় কার্যক্রমে অংশগ্রহণ বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে।