১৫ জুন ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
১ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
Logo TIB

সংস্কার বিরোধী অবস্থান নিয়েছে সরকার : টিআইবি

বাজেট প্রতিক্রিয়া সংস্কার বিরোধী অবস্থান নিয়েছে সরকার : টিআইবি, ২০২৫-২৬ বাজেটে কালোটাকা সাদা করার সুযোগ অব্যাহত রাখায় সরকারের সমালোচনায় টিআইবি। বলেছে, এটি সংবিধানবিরোধী, দুর্নীতিবান্ধব ও সংস্কারবিরোধী সিদ্ধান্ত।

নিজস্ব প্রতিবেদক :

২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে কালোটাকা সাদা করার সুযোগ অব্যাহত রাখার কঠোর সমালোচনা করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। সংস্থাটির মতে, এই সিদ্ধান্ত রাষ্ট্রীয় সংস্কার, বিশেষ করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সংস্কারের মূল উদ্দেশ্যের সম্পূর্ণ পরিপন্থী এবং সংবিধানবিরোধী।

সোমবার (২ জুন) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে টিআইবি বলেছে, ‘অন্তর্বর্তী সরকারের বাজেট প্রস্তাব দুর্নীতিকে উৎসাহ দেওয়ার এক প্রকার অঙ্গীকার। এটি একই সঙ্গে অনৈতিক, বৈষম্যমূলক এবং সংবিধানের ২০(২) অনুচ্ছেদের লঙ্ঘন, যেখানে বলা হয়েছে—অনুপার্জিত আয়কে রাষ্ট্র অবৈধ বলেই বিবেচনা করবে।’

সংবিধান লঙ্ঘন ও বৈষম্যমূলক সিদ্ধান্ত

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, “যেভাবেই ব্যাখ্যা করা হোক না কেন, কালোটাকা সাদা করার সুযোগ রাষ্ট্র সংস্কার ও দুর্নীতিবিরোধী কার্যক্রমকে অবজ্ঞা করে রিয়েল এস্টেট লবির কাছে আত্মসমর্পণ করার নামান্তর। এই সুযোগ সৎ আয়কারীদের প্রতি বৈষম্য তৈরি করে, আবাসন খাতে একচেটিয়া কর্তৃত্ব বাড়ায় এবং সামাজিক ন্যায়ের পরিপন্থী অবস্থান তৈরি করে।”

তিনি আরও বলেন, “এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে সরকার নাগরিকদের বছরজুড়ে অবৈধ আয় করার এবং বছর শেষে তা বৈধ করার লাইসেন্স দিচ্ছে। আবাসন খাত দীর্ঘদিন ধরে দেশের অন্যতম দুর্নীতিগ্রস্ত খাত হিসেবে চিহ্নিত। এই খাতকে তুষ্ট করতে গিয়ে রাষ্ট্র দুর্নীতির পথে উৎসাহ জোগাচ্ছে।”

সংস্কার কমিশনের সুপারিশেরও বরখেলাপ

বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, “দুদক সংস্কার কমিশন সুস্পষ্টভাবে সুপারিশ করেছিল—কালোটাকা বৈধ করার পথ চিরতরে বন্ধ করতে হবে। এই সুপারিশে সকল রাজনৈতিক দল একমত হয়েছিল। অথচ সরকার সেই ঐক্যমতের বিরুদ্ধে গিয়ে আত্মঘাতী ও স্ববিরোধী পদক্ষেপ নিচ্ছে।”

অর্থ পাচার ও কর নীতির অস্পষ্টতা

টিআইবি বাজেট বক্তৃতায় অর্থ পাচার ও বিদেশে অবস্থানরত প্রাক্তন বাংলাদেশিদের সম্পদের ওপর কর আরোপ সংক্রান্ত ঘোষণাকেও অপর্যাপ্ত বলেছে। সংস্থাটি বলেছে, “বাজেটে এই গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে কেবল একটি বাক্য ব্যয় করে দায় সেরেছেন অর্থ উপদেষ্টা। কর ও জরিমানার যে কথা বলা হয়েছে, তা বাস্তবায়নের কোনো স্পষ্ট রূপরেখা দেওয়া হয়নি।”

চূড়ান্ত দাবি ও সতর্কতা

বিজ্ঞপ্তির শেষাংশে টিআইবি জোর দিয়ে বলেছে, “দুর্নীতিবিরোধী অবস্থান যদি সরকারের সত্যিকার লক্ষ্য হয়, তবে কালোটাকা বৈধ করার সুযোগ অবিলম্বে বাতিল করতে হবে। তা না হলে সরকারের সুশাসনের প্রতিশ্রুতি জনগণের কাছে লোকদেখানো হিসেবেই প্রতিভাত হবে। দুর্নীতির স্বাভাবিকীকরণ শুধু ত্বরান্বিতই হবে।”

পোস্টটি শেয়ার করুন

Facebook
WhatsApp
X
LinkedIn