ড. ইউনূসের নেতৃত্বে সংস্কারে সমর্থন, বিচার ও মানবাধিকারেও উদ্বেগ

সমাজকাল প্রতিবেদক :

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারকে সংস্কার সম্পন্নের জন্য ‘পর্যাপ্ত সময়’ দেওয়ার পক্ষে মত দিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। নির্বাচন নিয়ে কোনো চাপ নেই বলেও স্পষ্ট করেছে ইইউ।

সোমবার (৫ মে) জাতীয় প্রেস ক্লাবে কূটনৈতিক প্রতিবেদকদের সংগঠন ডিকাব আয়োজিত ‘ডিকাব টক’-এ অংশ নিয়ে ঢাকায় নিযুক্ত ইইউ রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার বলেন, “বাংলাদেশের পরবর্তী জাতীয় নির্বাচন কখন হবে, তা নির্ধারণ করবে বাংলাদেশই। তবে তার আগে চলমান সংস্কার কার্যক্রম শেষ হওয়া প্রয়োজন। ইউরোপীয় ইউনিয়ন এ সংস্কার প্রক্রিয়াকে পূর্ণ সমর্থন জানায়।”

তিনি বলেন, “বর্তমানে রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে সংস্কার একটি বড় সুযোগ এনে দিয়েছে। এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে জাতির ভবিষ্যৎ বিনির্মাণে অগ্রসর হওয়া জরুরি।”

🔸 নির্বাচন নিয়ে ইইউর অবস্থান
ইইউ রাষ্ট্রদূত স্পষ্টভাবে বলেন, “নির্বাচন নিয়ে বাংলাদেশ সরকারের ওপর ইউরোপীয় ইউনিয়নের কোনো চাপ নেই।” তবে তিনি উল্লেখ করেন, ইউরোপ একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন চায় এবং এতে সহায়তার আগ্রহ প্রকাশ করে।

🔸 জুলাই-আগস্ট হত্যাকাণ্ড ও বিচার প্রত্যাশা
মাইকেল মিলার জানান, জুলাই-আগস্টে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের দায়ীদের বিচার দ্রুত ও স্বচ্ছতার সঙ্গে সম্পন্ন হওয়া উচিত বলে মনে করে ইইউ।

🔸 রাখাইনের মানবিক করিডর
রাখাইন রাজ্যে জাতিসংঘের প্রস্তাবিত মানবিক করিডর প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “এটি একটি ইতিবাচক উদ্যোগ। উভয় পক্ষের মানুষের জন্য সহায়তা নিশ্চিত করতে হবে।”

🔸 অর্থ পাচার ও ফিরিয়ে আনা
ইউরোপে পাচার হওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনতে চাইলে বাংলাদেশ সরকারকে যথাযথ তথ্য-উপাত্তসহ যোগাযোগের পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। জানান, এই প্রক্রিয়া শেষ হতে ৩ থেকে ৪ বছর সময় লাগতে পারে।

🔸 জামায়াত সফর ও রাজনীতিতে ইইউর দৃষ্টিভঙ্গি
জামায়াতে ইসলামীর প্রতিনিধি দলের ব্রাসেলস সফরের বিষয়ে মিলার বলেন, “দলটির আগ্রহেই তাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। বিএনপি, এনসিপি বা অন্য রাজনৈতিক দলগুলোর জন্যও ইইউ সদর দপ্তরের দরজা খোলা রয়েছে।”

🔸 নারী সংস্কার কমিশন নিয়ে ইইউর মন্তব্য
নারী সংস্কার কমিশন নিয়ে বিতর্কে তিনি বলেন, “এটি বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়। তবে ইইউ নারী-পুরুষের সমান অধিকারে বিশ্বাসী এবং সর্বত্র তা সমর্থন করে।”

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডিকাব সভাপতি এ কে এম মঈনুদ্দিন এবং সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক আরিফুজ্জামান মামুন।