১৫ জুন ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
১ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
USA-China

শুল্ক বিরতিতে ‘কূটনৈতিক বিজয়’, এরপর পাল্টা কৌশল

চীন যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্য যুদ্ধ, শুল্ক বিরতি, চীন কূটনীতি, ট্রাম্প চীন নীতি, বাণিজ্য আলোচনা ২০২৫, ফেন্টানিল সহযোগিতা, হুয়াওয়ে চিপ নিষেধাজ্ঞা, চীন প্রযুক্তি রপ্তানি, চীন রেয়ার আর্থ, শি চিনপিং বাণিজ্য

সমাজকাল ডেস্ক

যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যকার সাম্প্রতিক শুল্ক বিরতি চীনে ‘কূটনৈতিক বিজয়’ হিসেবে দেখা হলেও, বেইজিংয়ের পরবর্তী লক্ষ্য আরও জটিল। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে টেকসই বাণিজ্য সমঝোতা প্রতিষ্ঠা করা, তবুও নিজেদের রাজনৈতিক অবস্থান বজায় রেখে।

সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় ১২ মে অনুষ্ঠিত আলোচনায় ৯০ দিনের জন্য একটি শুল্ক বিরতি কার্যকর হয় যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে। এতে দুই দেশের মোট ১১৫ শতাংশ হারে আরোপিত শুল্ক হ্রাস পায়, যা কার্যত একটি বাণিজ্য অবরোধের দিকে যাচ্ছিল। চীনের রাষ্ট্রীয় প্রচারমাধ্যম ও বিশ্লেষকদের কাছে এই চুক্তিকে ‘বিজয়’ হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে, তবে বেইজিং ইতিমধ্যে কঠোর অবস্থান নিয়েছে পরবর্তী আলোচনার প্রেক্ষাপটে।

চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় যুক্তরাষ্ট্রকে অভিযুক্ত করেছে ‘চুক্তি ভঙ্গ’ এবং হুয়াওয়ের এআই চিপ ব্যবহারে হুঁশিয়ারি দিয়ে চীনকে দমন করার চেষ্টার অভিযোগে। ফেন্টানিল উৎপাদনের বিরুদ্ধে সহযোগিতার ক্ষেত্রেও চীন দ্বিধান্বিত, বলে উল্লেখ করেছে এটি ‘যুক্তরাষ্ট্রের সমস্যা, চীনের নয়’।

বিশ্লেষকরা বলছেন, চীন এখন যুক্তরাষ্ট্রের কৌশলগত প্রতিদ্বন্দ্বিতা মোকাবিলায় দীর্ঘমেয়াদি প্রস্তুতি নিচ্ছে। এদিকে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রশাসন এখনও চীনের কাছে তাদের নির্দিষ্ট চাহিদা উপস্থাপন করেনি, তবে বাণিজ্য ঘাটতি, চাকরি হ্রাস এবং প্রযুক্তি স্থানান্তরের অভিযোগ দীর্ঘদিন ধরেই চলছে।

চীনের সম্ভাব্য কৌশল:

যুক্তরাষ্ট্র থেকে আরও পণ্য আমদানির প্রতিশ্রুতি।

ফেন্টানিল সংশ্লিষ্ট রাসায়নিক উৎপাদনে কড়াকড়ি।

বিরোধপূর্ণ প্রযুক্তি খাতে অগ্রগতি চেয়ে আলোচনায় অংশগ্রহণ।

‘রেয়ার আর্থ’ উপাদানের রপ্তানি সীমিত রেখে কৌশলগত চাপ প্রয়োগ।

বিশ্লেষক মতামত:
হংকং ইউনিভার্সিটির সহকারী অধ্যাপক ব্রায়ান ওয়ং বলেন, “চীনের শীর্ষ সিদ্ধান্তকারীরা জানেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে উত্তেজনা হ্রাসের আশায় বিভ্রমে থাকা যাবে না।”
স্টিমসন সেন্টারের চীন কর্মসূচির পরিচালক ইউন সান মনে করেন, “ট্রাম্প নামক ঝড় মোকাবিলার জন্য চীন কিছু ছাড় দিতে পারে, তবে যুক্তরাষ্ট্রকে বাস্তববাদী হতে হবে।”

চীনের বিশ্ব কূটনীতি জোরদার:

লাতিন আমেরিকা, ইউরোপ, ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য ও কৌশলগত অংশীদারত্ব বাড়াতে চীন ইতিমধ্যেই সক্রিয়।

চীনের প্রেসিডেন্ট শি চিনপিং স্পেন, ব্রাজিল, থাইল্যান্ডসহ বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বৈঠকে সহযোগিতার বার্তা দিয়েছেন।
চীনের দৃষ্টিভঙ্গিতে, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সীমিত বাণিজ্যিক সম্পর্ক বজায় রাখাই ভবিষ্যতের কৌশল। ৯০ দিনের মধ্যে আলোচনায় উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি না হলে, দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য আরও সংকুচিত হতে পারে, যা বৈশ্বিক অর্থনীতির ওপরও প্রভাব ফেলবে।
তথ্য সূত্র “ সিএনএন

পোস্টটি শেয়ার করুন

Facebook
WhatsApp
X
LinkedIn