১৫ মে ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

শুরু হয়েছে ৭৫তম বার্ষিক শীর্ষ সম্মেলন

সমাজকাল ডেস্ক :
যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট ন্যাটোর ৭৫ বছর পূর্ণ হয়েছে কয়েক মাস আগে। মঙ্গলবার (৯ জুলাই)জোটের ৭৫তম বার্ষিক শীর্ষ সম্মেলন শুরু হতে যাচ্ছে ওয়াশিংটনে। তিন দিনের এই সম্মেলনে অংশ নেবেন ৩২ সদস্য দেশের রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানরা।

এই সম্মেলনে ন্যাটোকে একটি বৃহৎ ও শক্তিশালী জোট হিসেবে দেখানোই উদ্দেশ্য। তবে এমন সময় জোটের নেতারা ওয়াশিংটনে জড়ো হচ্ছেন, যখন রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে হোঁচট খাওয়া এবং আটলান্টিকের উভয় পাশে মধ্যপন্থি ও উগ্র ডানপন্থিদের মধ্যে নির্বাচনী ঝড়ও তাদের সঙ্গী হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম সিএনএন বলছে, আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে সম্ভাব্য রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে প্রথম বিতর্কে বিপর্যয়কর ফলের পর নিজের রাজনৈতিক জীবন নিয়ে লড়ছেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।

ন্যাটো জোটের প্রতি ট্রাম্পের অঙ্গীকার নিয়ে মিত্রদের মধ্যে সন্দেহ রয়েছে। আপাতত বাইডেন নির্বাচনী প্রচার থেকে দৃষ্টি সরিয়ে সম্মেলনে যোগ দিতে আসা নেতাদের স্বাগত জানাবেন।

উদীয়মান চীনের প্রভাব ঠেকাতে এশিয়ায় ন্যাটোর ক্রমবর্ধমান ভূমিকার গুরুত্বের বিষয়টি মাথায় রেখে অস্ট্রেলিয়া, জাপান, নিউজিল্যান্ড ও দক্ষিণ কোরিয়ার নেতাদেরও আমন্ত্রণ জানিয়েছেন বাইডেন।
তবে সম্মেলনে নজর থাকবে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির ওপর। তিনি জোটের পক্ষ থেকে দৃঢ় সমর্থনের অপেক্ষায় আছেন। যদিও এবারও ইউক্রেনকে ন্যাটোতে যোগ দেওয়ার আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে না।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরিবর্তিত রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে ১৯৪৯ সালে ১২ সদস্য নিয়ে যাত্রা শুরু করা ন্যাটো ১৯৫২ গ্রিস ও তুরস্ককে যুক্ত করে প্রথম জোট সম্প্রসারণ করে। নবম দফার সম্প্রসারণের আগ পর্যন্ত ন্যাটো সাবেক সোভিয়েতভুক্ত ১৪টি রাষ্ট্রকে ন্যাটোভুক্ত করে।

বিশেষত ১৯৯৯ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের নেতৃত্বে হওয়া সামরিক জোট ‘ওয়ারশ প্যাক্ট’ভুক্ত তিন দেশ হাঙ্গেরি, চেক প্রজাতন্ত্র এবং পোল্যান্ডকে জোটে নেওয়া হয়। স্নায়ুযুদ্ধের পর ন্যাটো ইউরোপের মধ্যাঞ্চল থেকে আরও পূর্বদিকে অগ্রসর হয়ে একদম রাশিয়ার সীমানা বরাবর বিস্তৃত হতে থাকলে মস্কো এ নিয়ে কড়া অবস্থান গ্রহণ করতে শুরু করে।

২০০৪ সালে রোমানিয়া, বুলগেরিয়া, সেøাভাকিয়া, সেøাভেনিয়া, এস্তোনিয়া, লিথুয়ানিয়া ও লাটভিয়ার জোটভুক্ত করার পর মস্কোর আপত্তি আরও তীব্র হয়। আর দুই বছর আগে ইউক্রেনকে ন্যাটো জোটে নেওয়ার আলোচনা শুরু হলে রাশিয়াকে চূড়ান্তভাবে নিরাপত্তা নিয়ে ভাবাতে বাধ্য করে।

২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেন আক্রমণ করে বসে রাশিয়া। এরপর কিয়েভের পক্ষে দাঁড়ায় ন্যাটোর মিত্ররা। রাশিয়ার ত্বরিত বিজয় ঠেকিয়ে দিয়ে পশ্চিমাদের মন জয় করে নিয়েছেন ইউক্রেনীয়রা। তবে রুশ সেনারা দীর্ঘদিন ধরে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন এবং পূর্বাঞ্চলে তারা অগ্রসর হচ্ছেন।

তাই ন্যাটো আগামী দিনে কী করবে, সেটা তাদের আরও চিন্তাভাবনা করেই করতে হবে। এখন ওয়াশিংটনের সম্মেলনে কী সেটাই দেখার বিষয়।