১৫ জুন ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
১ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
children day

শিশু দিবস : শিশুদের স্বপ্নের জন্য এক প্রতিশ্রুতির দিন

শিশু দিবস : শিশুদের স্বপ্নের জন্য এক প্রতিশ্রুতির দিন, শিশু দিবস শুধু উৎসব নয়, এটি শিশুদের অধিকার, সুরক্ষা ও উন্নয়নের প্রতীক। জানুন ইতিহাস, বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট ও বাংলাদেশে শিশু দিবস উদযাপনের পূর্ণাঙ্গ বিবরণ।

সমাজকাল ডেস্ক:

প্রতিটি শিশুই এক একটি স্বপ্ন। আর সেই স্বপ্নের প্রতিফলনেই গড়ে ওঠে আগামীর পৃথিবী। শিশু দিবস—শুধু একটি আনুষ্ঠানিকতা নয়, বরং শিশুদের অধিকারের স্বীকৃতি, সুরক্ষা, আনন্দ ও বিকাশের প্রতিশ্রুতি। বিশ্বজুড়ে পালিত এই বিশেষ দিনটি শিশুদের প্রতি ভালোবাসা ও দায়িত্ববোধের প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছে।

🕊️ ইতিহাস ও সূচনা
শিশু দিবসের ধারণার সূচনা হয়েছিল বহু আগেই। ১৮৫৭ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটসে রেভারেন্ড ডা. চার্লস লিওনার্ড প্রথম “রোজ ডে” উদযাপন করেছিলেন শিশুদের জন্য এক বিশেষ প্রার্থনা সভা আয়োজন করে। পরবর্তীতে এটি রূপ নেয় “শিশু দিবসে”। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ১৯২৫ সালে জেনেভায় অনুষ্ঠিত শিশু কল্যাণ সম্মেলনে আনুষ্ঠানিকভাবে আন্তর্জাতিক শিশু দিবস পালনের সিদ্ধান্ত হয়।

পূর্ব ইউরোপ ও এশিয়ার বহু দেশে, বিশেষ করে প্রাক্তন সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্রগুলোতে, ১ জুন আন্তর্জাতিক শিশু দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে ১৯৫০ সাল থেকে। অপরদিকে, জাতিসংঘ ২০ নভেম্বরকে ঘোষণা করেছে বিশ্ব শিশু দিবস, শিশু অধিকারের ঘোষণাপত্র গৃহীত হওয়ার দিন হিসেবে।

বাংলাদেশে শিশু দিবস
বাংলাদেশে শিশু দিবস পালিত হয় দুইভাবে—
🔸 ১৭ মার্চ: জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিনকে ১৯৯৬ সাল থেকে “জাতীয় শিশু দিবস” হিসেবে ঘোষণা করে সরকার। শিশুবান্ধব এক রাষ্ট্র নির্মাণে বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে তুলে ধরতে এই দিনটি পালন করা হয় বিশেষ মর্যাদায়।
🔸 অক্টোবরের প্রথম সোমবার: বাংলাদেশে বিশ্ব শিশু দিবস পালিত হয়, যা শিশুদের আন্তর্জাতিক অধিকার ও কল্যাণের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে আয়োজিত হয়।

প্রতিবেশী ভারতের প্রেক্ষাপট
ভারতে শিশু দিবস পালিত হয় ১৪ নভেম্বর, ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরুর জন্মদিনে। শিশুদের প্রতি তাঁর ভালোবাসা ও শিক্ষার উপর জোর দেওয়াই এই সিদ্ধান্তের পেছনে প্রেরণা ছিল। নেহরু নিজেই বলতেন, “শিশুরাই জাতির ভবিষ্যৎ।”

একটি বৈশ্বিক প্রতিশ্রুতি
বিশ্বজুড়ে শিশু দিবস কেবল উৎসব নয়, এটি শিশুদের জন্য একটি নিরাপদ, শিক্ষামূলক ও ভালোবাসায় পূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিত করার অঙ্গীকারের দিন। শিশু অধিকার, শিক্ষা, পুষ্টি, স্বাস্থ্যসেবা, এবং শারীরিক ও মানসিক সুরক্ষার বার্তাকে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দেওয়াই এর মূল লক্ষ্য।

📢 শিশু দিবসের বার্তা
👉 শিশুরা যেন কখনো ঝরে না যায় দারিদ্র্য, যুদ্ধ, শোষণ বা অবহেলার কারণে।
👉 তাদের খেলাধুলা, সৃজনশীলতা ও শেখার অধিকার সুরক্ষিত হোক।
👉 আমরা যেন প্রতিটি শিশুর মধ্যে সম্ভাবনার দীপ্তি দেখতে শিখি।

সমাজকাল মনে করে, শিশুরা কেবল আজকের নয়, আগামী দিনের দেশ ও জাতির চালিকাশক্তি। শিশুদের প্রতি যত্নবান হওয়া, তাদের নিরাপদ ও সমান সুযোগ সৃষ্টি করা প্রতিটি রাষ্ট্র, পরিবার ও নাগরিকের কর্তব্য। তাই শিশু দিবস শুধু এক দিনের উদযাপন নয়, এটি শিশুদের জন্য বছরভর দায়িত্ব পালনের শপথ।

পোস্টটি শেয়ার করুন

Facebook
WhatsApp
X
LinkedIn