১৫ মে ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মার্কিন দুই শীর্ষ কর্মকর্তা ঢাকায়, দক্ষিণ এশিয়া ও ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চল নিয়ে উচ্চপর্যায়ের আলোচনার ইঙ্গিত

সমাজকাল ডেস্ক

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের দুই শীর্ষ কর্মকর্তা ঢাকায় এসে পৌঁছেছেন। দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি নিকোল অ্যান চুলিক এবং পূর্ব এশীয় ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় (ইন্দো-প্যাসিফিক) বিষয়ক ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি অ্যান্ড্রু আর হেরাপ দুজন‌ই তিনদিনের সফল শুরু করলেন। জানা গেছে, তারা আলাদা দুটি ফ্লাইটে একজন মঙ্গলবার দিবাগত রাতে এবং একজন আজ হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেন।
জানা গেছে, নিকোল সফরে সংস্কার ও গণতান্ত্রিক পথেগণতান্ত্রিক পথে ফেরত আনার বিষয় নিয়ে আলোচনা করবেন। আজ বিকেলে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামীসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলের সঙ্গেও বৈঠকের কথা রয়েছে তার।
এ ছাড়া প্রধান উপদেষ্টা, পররাষ্ট্র উপদেষ্টাসহ সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে বৈঠকের কথা রয়েছে।
এই সফরটিকে কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন। তাদের মতে, এই দুই অঞ্চলের দায়িত্বপ্রাপ্ত মার্কিন কর্মকর্তার একযোগে বাংলাদেশ সফর একটি কৌশলগত বার্তা বহন করে। বিশেষ করে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে ভূরাজনৈতিক প্রভাব, দক্ষিণ এশিয়ার নিরাপত্তা পরিবেশ এবং যুক্তরাষ্ট্রের অংশীদারিত্ব বিষয়ক অগ্রাধিকারগুলোর আলোকে এটি গুরুত্ব বহন করে।
মার্কিন কূটনীতিক নিকোল ঢাকা সফরে সংস্কার ও গণতান্ত্রিক পথে ফেরত আনার বিষয় নিয়ে আলোচনা করবেন। সফরকালে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামীসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলের সঙ্গেও বৈঠক করবেন তারা।

এ ছাড়া প্রধান উপদেষ্টা, পররাষ্ট্র উপদেষ্টাসহ সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে বৈঠকের কথা রয়েছে।
আলোচনার সম্ভাব্য এজেন্ডা:

১. দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক জোরদারকরণ:
বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং নিরাপত্তাগত সম্পর্ক উন্নয়নের বিষয়টি প্রধান আলোচ্য হতে পারে।

২. ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্র্যাটেজি:
অ্যান্ড্রু হেরাপের সফর ইঙ্গিত দেয় যে, যুক্তরাষ্ট্রের ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশল বাস্তবায়নে বাংলাদেশকে গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।

৩. গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও সুশাসন:
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর নিয়মিতভাবে এসব বিষয়ে বাংলাদেশের অগ্রগতির ওপর নজর রাখে। সফরকালে এসব ইস্যুতেও আলোচনা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

৪. আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও রোহিঙ্গা সংকট:
দক্ষিণ এশিয়ার বৃহৎ মানবিক সংকট হিসেবে রোহিঙ্গা ইস্যুতে সহযোগিতা ও ভবিষ্যৎ করণীয় নিয়েও আলোচনা হতে পারে।

সফরের প্রেক্ষাপট ও তাৎপর্য:

ট্রাম্প প্রশাসনের প্রেক্ষাপটে এই সফরটি নতুন মাত্রা যোগ করছে। যদিও ট্রাম্পের প্রশাসনে দক্ষিণ এশিয়া নিয়ে সরাসরি মনোযোগ সীমিত ছিল, তবে বর্তমান বৈশ্বিক ভূরাজনৈতিক বাস্তবতায় এই অঞ্চলের কৌশলগত গুরুত্ব দিন দিন বাড়ছে। যুক্তরাষ্ট্র চীনের প্রভাব প্রতিহত করতে দক্ষিণ ও পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ কূটনৈতিক ও নিরাপত্তা সংযোগ গড়ে তুলছে।

কূটনৈতিক চ্যানেলগুলো মনে করছে, এই সফর যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা করতে পারে। যদি দুই দেশের মধ্যে কৌশলগত আলোচনায় উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়, তবে তা ভবিষ্যতের নিরাপত্তা, বাণিজ্য এবং উন্নয়ন সহযোগিতার ক্ষেত্রে ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে