১৫ জুন ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
১ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বাংলাদেশের আকাশে আধঘণ্টা চক্কর দিলো ভারতীয় ড্রোন, উদ্বেগ সীমান্তে

বাংলাদেশের আকাশে আধঘণ্টা চক্কর দিলো ভারতীয় ড্রোন, উদ্বেগ সীমান্তে, কুড়িগ্রামের বড়াইবাড়ী সীমান্তে ফের ভারতীয় ড্রোন উড়ল। স্থানীয়দের মাঝে আতঙ্ক। বিজিবি নিশ্চিত করলেও বিএসএফ দায় স্বীকার করেনি। আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ।

কুড়িগ্রাম সংবাদদাতা :

কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার ঐতিহাসিক বড়াইবাড়ী সীমান্তে ফের বাংলাদেশের আকাশে উড়ল ভারতীয় ড্রোন। স্থানীয় বাসিন্দাদের মাঝে দেখা দিয়েছে উৎকণ্ঠা ও ক্ষোভ।

শুক্রবার (৩০ মে) রাত ৮টা থেকে সাড়ে ৮টা পর্যন্ত বাংলাদেশের অভ্যন্তরে প্রায় ৫০০ মিটার ভিতরে চারটি ড্রোন চক্কর দিতে দেখা যায়। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, ড্রোনগুলো ভারতের আসাম রাজ্যের কাকড়িপাড়া বিএসএফ ক্যাম্পের আওতাধীন এলাকা থেকে পাঠানো হয়।

রৌমারী সদর ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ফিরোজ মিয়া বলেন, “২৭ মে ভারতের ১৪ নাগরিককে পুশ-ইন করার ঘটনার পর থেকেই তারা ড্রোনের মাধ্যমে নজরদারি চালাচ্ছে। শুক্রবার রাতেও ৪-৫টি ড্রোন বড়াইবাড়ী ও বারবান্দা গ্রামে চক্কর দেয়।”

বিজিবির প্রতিক্রিয়া
জামালপুর বিজিবি ৩৫ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল হাসানুর রহমান এক ক্ষুদেবার্তায় ঘটনা নিশ্চিত করলেও আনুষ্ঠানিকভাবে বিজিবির পক্ষ থেকে বিস্তারিত বিবৃতি দেওয়া হয়নি। বিজিবি সূত্র জানায়, পিলার ১০৬৭ (১-এস)-এর কাছাকাছি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ বিষয়ে বিএসএফ-এর সঙ্গে যোগাযোগ করলেও তারা দায় অস্বীকার করে।

সূত্র আরও জানায়, সীমান্তে ২০০ গজ পর্যন্ত ভারতের দায়িত্বের মধ্যে সাধারণ কারও পক্ষে ড্রোন ওড়ানো অসম্ভব। অতএব, এই তৎপরতা যে বিএসএফেরই তা প্রায় নিশ্চিত হলেও, তারা দায় নিচ্ছে না।

আইন বিশ্লেষকদের মত
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইশরাত হাসান বলেন, “বৈধ অনুমতি ছাড়া কোনো রাষ্ট্র অন্য কোনো রাষ্ট্রের আকাশসীমা ব্যবহার করতে পারে না। এটি আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন। জাতিসংঘের গাইডলাইনে স্পষ্টভাবে সীমান্ত এলাকায় অস্ত্র বা নজরদারি প্রযুক্তি ব্যবহারের নিয়ম আছে। ভারতের এমন আচরণ মানবাধিকার এবং দ্বিপক্ষীয় চুক্তিরও লঙ্ঘন।”

তিনি আরও বলেন, “বাংলাদেশকে কূটনৈতিকভাবে দ্রুত প্রতিক্রিয়া জানাতে হবে। এমন অপতৎপরতার অকাট্য প্রমাণ সংগ্রহ করে জাতিসংঘ বা আন্তর্জাতিক মহলে উত্থাপন করা দরকার।”

প্রতিবাদ ও আহ্বান
স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা ভারতের এই ড্রোন ওড়ানোর ঘটনাকে স্পষ্ট আগ্রাসী মনোভাব হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। তারা রাষ্ট্রীয়ভাবে কঠোর প্রতিবাদ ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিষয়টি তুলে ধরার দাবি জানিয়েছেন।

পোস্টটি শেয়ার করুন

Facebook
WhatsApp
X
LinkedIn