১৫ জুন ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
১ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
Eye

বয়স বাড়লেও ছানি পড়বে না, প্রতিদিন খান এই ৫টি খাবার

বয়স বাড়লেও ছানি পড়বে না, প্রতিদিন খান এই ৫টি খাবার, চোখকে অবহেলা নয়। আজ থেকেই খাদ্যতালিকায় যুক্ত করুন চোখের যত্নে এই খাদ্যগুলো। মনে রাখবেন, সুস্থ চোখ মানেই সুস্থ জীবন। আর চোখের যত্নে ‘পুষ্টি’ই হতে পারে সবচেয়ে বড় ও সস্তা ওষুধ। গাজর থেকে ডিম, সামুদ্রিক মাছ থেকে কমলালেবু—বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চোখ ভালো রাখতে নিয়মিত এই খাবারগুলোই যথেষ্ট

সমাজকাল ডেস্ক:

বর্তমান প্রজন্ম খাদ্যাভ্যাসে অনেকটাই সচেতন। কেউ চিনির ভয়ে মিষ্টি এড়িয়ে চলেন, কেউ গ্যাস্ট্রিকের ভয়ে তেল-মসলা বর্জন করেন, আবার কেউ হাড়ের যত্নে ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট খান। কিন্তু আমাদের শরীরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ—চোখ—সেই দিকেই নজর দেওয়া হয় না অনেক সময়। অথচ বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দৃষ্টিশক্তি কমে যাওয়া, ছানি পড়া, রাতকানা, চোখে শুষ্কতা বা অস্বস্তির মতো সমস্যাগুলোর হার দিন দিন বাড়ছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, চোখের সুস্থতা বজায় রাখতে এবং বয়সজনিত সমস্যা প্রতিরোধ করতে কিছু নির্দিষ্ট খাবার অত্যন্ত কার্যকর। এরা শুধু চোখের গঠনগত অংশকেই রক্ষা করে না, একইসঙ্গে চোখের ভিতরের রেটিনা, কর্নিয়া, লেন্স এবং অপটিক নার্ভের কার্যকারিতাও সঠিক রাখে।

চলুন জেনে নিই সেই ৫টি দৃষ্টিশক্তিবর্ধক খাবার—

🥕 ১. গাজর – প্রাকৃতিক ভিটামিন এ-এর আধার
গাজরকে চোখের জন্য “প্রাকৃতিক টনিক” বলা হয়ে থাকে। এতে রয়েছে বিটা-ক্যারোটিন, যা আমাদের শরীরে ভিটামিন এ-তে রূপান্তরিত হয়। ভিটামিন এ রড ও কন সেল নামক চোখের আলোক-সংবেদী কোষগুলোর সুস্থতা রক্ষায় অপরিহার্য। এর অভাবে নাইট ব্লাইন্ডনেস (রাতকানা) দেখা দিতে পারে। প্রতিদিন এক কাপ কাঁচা গাজর খেলে চোখের আলো অনেকটাই দীর্ঘস্থায়ী হয়।

🥬 ২. পালং শাক ও গাঢ় সবুজ শাকসবজি – চোখের ফিল্টারকে শক্তিশালী করে
পালং শাক, কলমি শাক, পুঁই শাক, ব্রোকলি বা মুলা শাকের মতো গাঢ় সবুজ পাতাযুক্ত সবজিতে থাকে লুটেইন ও জেক্সানথিন। এই উপাদান দুটি চোখের ম্যাকুলা (macula) নামক অংশে জমা হয়ে সূর্যের ক্ষতিকর নীল রশ্মি শোষণ করে, রেটিনাকে সুরক্ষিত রাখে। বয়স বাড়লে যে ম্যাকুলার ডিজেনারেশন বা ছানি পড়ার প্রবণতা তৈরি হয়, তা প্রতিরোধে এই শাকসবজি অত্যন্ত কার্যকর।

🐟 ৩. সামুদ্রিক মাছ – ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিডের উৎস
স্যামন, টুনা, সার্ডিন কিংবা ম্যাকারেলের মতো সামুদ্রিক মাছে রয়েছে উচ্চমাত্রার ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, যা চোখের রেটিনা এবং কর্নিয়ার সুস্থতা রক্ষায় সাহায্য করে। এটি চোখের ভিতরের জলীয় স্তর (tear film) বজায় রাখে, ফলে ড্রাই আই সিনড্রোম বা শুষ্ক চোখের সমস্যা কমে। যারা নিয়মিত কম্পিউটার ব্যবহার করেন, তাদের জন্য এই মাছ অত্যন্ত উপকারী।

🥚 ৪. ডিম – চোখের জন্য পুষ্টি-প্যাকড প্যাকেজ
ডিমে লুটেইন, জেক্সানথিন ছাড়াও রয়েছে জিঙ্ক, যা ভিটামিন এ-কে লিভার থেকে রেটিনায় পৌঁছাতে সাহায্য করে। ডিমের কুসুমে থাকা উপাদান চোখের পেশিকে শক্তিশালী রাখে এবং ছানি পড়া প্রতিরোধ করে। গবেষণায় দেখা গেছে, সপ্তাহে অন্তত ৪-৫টি ডিম খেলে দৃষ্টিশক্তি উন্নত হয় ও চোখে ক্লান্তি কমে।

🍊 ৫. কমলালেবু ও ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফল – অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের ঢাল
কমলালেবু, পেয়ারা, আমলকি, স্ট্রবেরি এবং আঙ্গুর—এই ফলগুলিতে রয়েছে প্রাকৃতিক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করা ভিটামিন সি, যা চোখের কোষগুলিকে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস থেকে রক্ষা করে। ছানি পড়া, চোখ লাল হওয়া বা সংক্রমণের প্রবণতা কমাতেও ভিটামিন সি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

👁 চোখের সুস্থতা বজায় রাখতে আরও কিছু টিপস:
রোজ অন্তত ৮ গ্লাস পানি খান—চোখ শুষ্ক হওয়া কমে যাবে।

দীর্ঘক্ষণ স্ক্রিনে কাজ করলে প্রতি ২০ মিনিটে ২০ সেকেন্ড ২০ ফুট দূরে তাকান—২০-২০-২০ নিয়ম।

ধুলোবালি এড়াতে সানগ্লাস ব্যবহার করুন।

রাতে ঘুমের সময় চোখে ঠাণ্ডা পানির ভেজা কাপড় রাখুন—চোখ ঠান্ডা থাকবে।

পোস্টটি শেয়ার করুন

Facebook
WhatsApp
X
LinkedIn