পদ্মা সেতু থেকে ১৬৩১ কোটি ও বঙ্গবন্ধু এক্সপ্রেসওয়ে থেকে ১৫৫ কোটি টাকা টোল আদায়: কাদের
নিজস্ব প্রতিবেদক:
পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর থেকে চলতি বছরের ১৯ জুন পর্যন্ত বিভিন্ন যানবাহন থেকে মোট এক হাজার ৬৩১ কোটি ৮৬ লাখ ৫৩ হাজার ৪৫০ টাকা টোল আদায় করা হয়েছে। অন্যদিকে চলতি বছরে বঙ্গবন্ধু এক্সপ্রেসওয়ে (ধলেশ্বরী ও ভাংগা অংশ) থেকে ১৫৫ কোটি ৩৯ লাখ ৪৭ হাজার টাকার টোল আদায় হয়েছে।
আজ বৃহষ্পতিবার জাতীয় সংসদ অধিবেশনে প্রশ্নোত্তর পর্বে তিনি এ তথ্য জানান সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। স্পিকার ড. শিরীন শারমিনে চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদ অধিবেশনে সরকারি দলের সংসদ সদস্য ফরিদা ইয়াসমিনের লিখিত প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী আরো জানান, চলতি বছরে পদ্মা সেতু থেকে সর্বোচ্চ টোল আদায় হয়েছে।
একই দলের সংসদ সদস্য মো. মামুনুর রশীদ কিরনের প্রশ্নের জবাবে সড়ক পরিবহন ও সেতু (সেতু বিভাগ) মন্ত্রী জানান, গত এক বছরে অর্থাৎ জুলাই, ২০২৩ থেকে ১৯ জুন, ২০২৪ পর্যন্ত দেশের তিনটি সেতু (যমুনা নদীর উপর বঙ্গবন্ধু সেতু, ধলেশ্বরী নদীর উপর মুক্তারপুর সেতু এবং পদ্মা সেতু) থেকে টোল আদায় হয়েছে মোট এক হাজার ৪৭২ কোটি ৫ লাখ টাকা। এর মধ্যে পদ্মা সেতু থেকে ৮১১ কোটি ৫৭ লাখ টাকা, বঙ্গবন্ধু সেতু থেকে ৬৪৮ কোটি ৮৭ লাখ টাকা এবং মুন্সিগঞ্জের মুক্তারপুর সেতু থেকে ১১ কোটি ৬১ লাখ টাকা।
আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য আবু জাফর মোহাম্মদ শফি উদ্দিনের প্রশ্নের জবাবে সড়ক পরিবহন মন্ত্রী জানান, সড়ক ও জনপথ অধিদফতরের আওতাধীন টোল আদায় করা মহাসড়কের সংখ্যা ৪টি। যেগুলোতে চলতি অর্থবছরে ১৮৪ কোটি ৩৭ লাখ ২৪ হাজার টাকা আদায় করা হয়েছে। এর মধ্যে বঙ্গবন্ধু এক্সপ্রেসওয়ে (ধলেশ্বরী ও ভাংগা অংশ) ১৫৫ কোটি ৩৯ লাখ ৪৭ হাজার, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের হবিগঞ্জের রুস্তমপুর টোল প্লাজায় ১৫ কোটি ২৩ লাখ ৮৮ হাজার, নাটোরের হার্টিকামরুল-বনপাড়া সড়কে ১১ কোটি ৪৫ হাজার এবং চট্টগ্রামের পোর্ট একসেস রোডে ২ কোটি ৭৩ লাখ ৪৪ হাজার টাকা।
সরকারি দলের সংসদ সদস্য মোরশেদ আলমের প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের জানান, বর্তমানে দেশে ছোট-বড় ৪ হাজার ১৬৬টি সেতু রয়েছে। সেতুগুলো রক্ষণাবেক্ষণে ২০০৯-১০ অর্থবছর থেকে ২০২১-২২ অর্থবছর পর্যন্ত ১ হাজার ৯১৮ কোটি ৯৩ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। চলতি অর্থবছরে সেতুগুলো রক্ষণাবেক্ষণ খাতে ৩৫৩ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।
আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য এম আবদুল লতিফের প্রশ্নের জবাবে সেতু মন্ত্রী জানান, বাস রুট রেশনালাইজেশন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে প্রাথমিকভাবে ভিন্ন ভিন্ন রঙের ৯টি ক্লাস্টার, ২২টি কোম্পানি ও ৪২টি রুটের প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছে। এর মাঝে ৬টি ক্লাস্টার নগর পরিবহন ও ৩টি ক্লাস্টার শহরতলী পরিবহন।
২০২১ সালের ২৬ ডিসেম্বর ঘাটারচর-কাঁচপুর রুটে পরীক্ষামূলক ঢাকা নগর পরিবহন উদ্বোধন করা হয়। উক্ত সেবায় বিআরটিসির ৩০টি বাস চলছে। পরবর্তীতে ২০২২ সালের অক্টোবরে ঘাটারটর-স্টাফ কোয়ার্টার ও ঘাটারচর-কমদতলী থানা রুটে নগর পরিবহন চালু করা হয়। বর্তমানে ঘাটারটর-স্টাফ কোয়ার্টার রুটটি বন্ধ রয়েছে। অপর রুটে ২৫টি দ্বিতল বাস চলছে। ঘাটারচর-কাঁচপুর রুটে ২৫টি বাস চালানোর ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হয়েছে। এর পরে ঘাটারচর- মিরপুর-উত্তরা দিয়াবাড়ি ও ঘাটারচর-খামারবাড়ি-দিয়াবাড়ি রুট দুটি চালু করা হবে। চলতি বছরের মধ্যে আরো দুটি রুটে বাস চালুসহ সবুজ ক্লাস্টার সম্পূর্ণরূপে চালু করা হবে।
রাজধানীর গণপরিবহনে শৃঙ্খলা আনতে সরকার বিভিন্ন উদ্যোগ বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে উল্লেখ করে সড়ক পরিবহন মন্ত্রী জানান, ঢাকা মহানগরী ও পার্শ্ববর্তী এলাকার জনসাধারণ নিরাপদে স্বাচ্ছন্দ্যে ও স্বল্প সময়ে মেট্রোরেলে যাতায়াতের সুফল ভোগ করছে। প্রতিদিন তিন লাখ মানুষ মেট্রোরেল ব্যবহার করছে। বিআরটি প্রকল্পের আওতায় গাজীপুর থেকে এয়ারপোর্ট এলাকাকে যানজটমুক্ত এবং সুশৃঙ্খল ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় আনতে ছয়টি স্থানে সাতটি ফ্লাইওভার উন্মুক্ত করা হয়েছে। গাজীপুর চৌরাস্তায় আরেকটি ফ্লাইওভার আগামী আগস্ট নাগাদ শেষ হবে। গাজীপুর থেকে এয়ারপোর্ট পর্যন্ত বিআরটি প্রকল্পটি পুরোপুরি শেষ হলে এই সড়কে ট্রাফিকের চাপ কমে যাবে।