১৫ জুন ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
১ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

জাতীয় ঐকমত্য ছাড়া মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে সিদ্ধান্ত নয় : গণফোরাম

জাতীয় ঐকমত্য ছাড়া মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে সিদ্ধান্ত নয় : গণফোরাম, মহান মুক্তিযুদ্ধের মীমাংসিত কোনো বিষয়—বিশেষ করে বীর মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি ও সংজ্ঞা—সংশোধনের অধিকার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নেই বলে জানিয়েছে গণফোরাম।

নিজস্ব প্রতিবেদক :

জাতীয় ঐকমত্য ছাড়া মহান মুক্তিযুদ্ধের মীমাংসিত কোনো বিষয়—বিশেষ করে বীর মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি ও সংজ্ঞা—সংশোধনের অধিকার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নেই বলে জানিয়েছে গণফোরাম। দলটির দাবি, এ ধরনের উদ্যোগ স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পরিপন্থী এবং মুক্তিযুদ্ধকে প্রশ্নবিদ্ধ করার অপচেষ্টা।

বুধবার (৪ জুন) বিকাল ৪টায় পুরানা পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত গণফোরাম সভাপতি পরিষদের জরুরি সভা শেষে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা জানানো হয়।

সভায় সভাপতিত্ব করেন গণফোরাম সভাপতি ও বীর মুক্তিযোদ্ধা মোস্তফা মোহসীন মন্টু। এতে উপস্থিত ছিলেন দলের সাধারণ সম্পাদক ডা. মে. মিজানুর রহমান, বীর মুক্তিযোদ্ধা এস এম আলতাফ হোসেন, সিনিয়র আইনজীবী সুব্রত চৌধুরী, এডভোকেট জগলুল হায়দার আফ্রিক, মেজবাহউদ্দীন, মোশতাক আহমেদ, এডভোকেট সুরাইয়া বেগম, এডভোকেট সেলিম আকবর এবং শাহ নুরুজ্জামান প্রমুখ।

গণফোরাম নেতারা বলেন, সম্প্রতি জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল আইন সংশোধন করে বীর মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি ও সংজ্ঞা পরিবর্তনের যে অধ্যাদেশ জারি করা হয়েছে, তা অস্পষ্ট ও বিভ্রান্তিকর। এসব ধারা নিয়ে জনমনে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে যার ব্যাখ্যা দেওয়ার দায়িত্ব সরকারের।

তারা আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ যাঁদের নেতৃত্বে ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে, তাঁদের মুক্তিযোদ্ধা পরিচয় নিয়ে প্রশ্ন তোলা মানেই মুক্তিযুদ্ধ ও তার নেতৃত্বকে বিতর্কিত করা। এটি স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তির হীন ষড়যন্ত্র বলে গণ্য করা হচ্ছে।

গণফোরাম মনে করে, এ ধরনের স্পর্শকাতর বিষয়ে যে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে জাতীয় ঐকমত্য গঠন আবশ্যক। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের একক সিদ্ধান্তের এখতিয়ার নেই। তবে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের একটি নির্ভুল তালিকা প্রণয়নে কমিশন গঠনের পক্ষে দলটি সমর্থন জানায়।

নেতারা বলেন, চলমান ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মূল লক্ষ্য হচ্ছে একটি বৈষম্যহীন, গণতান্ত্রিক ও মানবিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করা। কিন্তু কিছু অশুভ শক্তি ১৯৭১ বনাম ২০২৪ মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে বিভাজন তৈরির অপচেষ্টায় লিপ্ত। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যেন এই ষড়যন্ত্রে পা না দেয়, সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।

গণফোরাম আরও জানায়, সরকারের প্রধান দায়িত্ব হলো অতীত সরকারের দলীয়করণের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো পুনর্গঠন করে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য জাতীয় নির্বাচন আয়োজন করা। কিন্তু সংস্কারে ধীরগতি এবং কিছু অপ্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত—যেমন বন্দর, করিডোর ও মুক্তিযুদ্ধ সংশ্লিষ্ট বিতর্কিত উদ্যোগ—রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে অসন্তোষ তৈরি করছে।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তি শেষে দলের সাধারণ সম্পাদক ডা. মে. মিজানুর রহমান বলেন, “গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় ক্ষমতা হস্তান্তর নিশ্চিত না হলে দেশের ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তায় পড়ে যাবে।”

পোস্টটি শেয়ার করুন

Facebook
WhatsApp
X
LinkedIn