সমাজকাল প্রতিবেদক :
কক্সবাজার থেকে ঢাকাগামী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ড্যাশ-৮ উড়োজাহাজের চাকা উড্ডয়নের সময় খুলে যাওয়ার ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করেছে কর্তৃপক্ষ। ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে দেওয়া এক বিবৃতিতে ঘটনার ব্যাখ্যাও দিয়েছে রাষ্ট্রীয় এয়ারলাইন্স সংস্থা।
ঘটনার বিস্তারিত:
গত শুক্রবার (১৬ মে) কক্সবাজার বিমানবন্দর থেকে দুপুর ১টা ২১ মিনিটে উড্ডয়ন করে ফ্লাইট বিজি-৪৩৬। উড্ডয়নের পরপরই উড়োজাহাজটির বাম দিকের ল্যান্ডিং গিয়ারের একটি চাকা খুলে পড়ে যায়। বিষয়টি তাৎক্ষণিকভাবে কক্সবাজার কন্ট্রোল টাওয়ার থেকে বৈমানিককে জানানো হলে তিনি জরুরি অবস্থা ঘোষণা করে অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে ঢাকায় উড়োজাহাজটি নিরাপদে অবতরণ করান।
প্রাথমিক অনুসন্ধান ও ব্যাখ্যা:
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের জনসংযোগ বিভাগের মহাব্যবস্থাপক রওশন কবীর এক বিজ্ঞপ্তিতে জানান, উড়োজাহাজটির চাকা খুলে যাওয়ার পেছনে বিয়ারিং ফেইলর (bearing failure) অন্যতম কারণ হিসেবে প্রাথমিকভাবে চিহ্নিত হয়েছে। প্রস্তুতকারী সংস্থা কানাডার ডি-হেভিল্যান্ড এয়ারক্রাফট কোম্পানির রক্ষণাবেক্ষণ নির্দেশিকা অনুযায়ী, বিয়ারিং ফেল করলে পুরো চাকা বিচ্যুত হতে পারে। টাস্ক রেফারেন্স ০৫-৫০-১৭-২১০-৮০১-এ এর উল্লেখ আছে বলেও জানানো হয়।
কমিটি ও তদন্ত:
বিমান বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ দুটি পৃথক তদন্ত কমিটি গঠন করেছে—
সেফটি ইনভেস্টিগেশন কমিটি – চিফ অব ফ্লাইট সেফটির নেতৃত্বে তিন সদস্যের দল
প্রকৌশল ও ম্যাটেরিয়াল ম্যানেজমেন্ট কমিটি – তিন সদস্যের অপর এক কমিটি
এই দুই কমিটি মিলে ঘটনার মূল কারণ, রক্ষণাবেক্ষণ পদ্ধতি ও রেকর্ড যাচাই করবে এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা রোধে সুপারিশ দেবে। কমিটিগুলোকে তিন কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ ও সহযোগিতা:
- ঢাকায় অবস্থানরত সকল ড্যাশ-৮ উড়োজাহাজের চাকা তাৎক্ষণিকভাবে পরিদর্শন করা হয়েছে
- কানাডার প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ করে একটি স্পেশালাইজড টিম পাঠাতে অনুরোধ জানানো হয়
- প্রস্তুতকারী সংস্থা ১৯ মে, সোমবার বিশেষজ্ঞ দল পাঠাতে সম্মত হয়েছে
পরবর্তী পরিকল্পনা:
ঘটনার তদন্ত শেষে প্রস্তুতকারকের পরামর্শ অনুযায়ী প্রয়োজনীয় মেরামত ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করেই উড়োজাহাজটিকে আবার যাত্রীসেবায় ফিরিয়ে আনার পরিকল্পনা করছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। এ সংক্রান্ত যাবতীয় কার্যক্রম বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (CAAB) অনুমোদন সাপেক্ষে সম্পন্ন হবে।
যাত্রীর নিরাপত্তা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে পর্যাপ্ত তদন্ত ও প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে বিমান বাংলাদেশ।