১৫ মে ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

উর্দু ভাষায় পাকিস্তানে মুক্তি পাচ্ছে বাংলাদেশের ‘জংলি’

সমাজকাল বিনোদন ডেস্ক :

বাংলাদেশের গণ্ডি ছাড়িয়ে এবার উর্দু ভাষায় পাকিস্তানের প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাচ্ছে আলোচিত সিনেমা ‘জংলি’। সিয়াম আহমেদ ও শবনম বুবলী অভিনীত এই সিনেমাটি প্রথমবারের মতো উর্দুতে ডাবিং করে পাকিস্তানে মুক্তির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশের কোনো পূর্ণদৈর্ঘ্য বাংলা সিনেমা এই প্রথমবার উর্দু ভাষায় মুক্তি পাচ্ছে, যা নিঃসন্দেহে একটি সাংস্কৃতিক মাইলফলক।

🎬 সিনেমার পটভূমি ও সাফল্য
‘জংলি’ পরিচালনা করেছেন এম রাহিম, যিনি আগে ‘সাইকো’ ও ‘পরাণ’ সিনেমার সম্পাদনায় কাজ করেছেন এবং নিজস্ব নির্মাণশৈলীতে দর্শকদের প্রশংসা কুড়িয়েছেন। গল্প লিখেছেন আজাদ খান, চিত্রনাট্য করেছেন মেহেদী হাসান মুন ও কলকাতার সুকৃতি সাহা—যা সিনেমাটিকে দিয়েছে আন্তঃসাংস্কৃতিক স্পর্শ।

২০২৫ সালের ঈদুল ফিতরে ‘জংলি’ দেশের সিনেমা হলে মুক্তি পায় এবং দর্শকপ্রিয়তায় ব্যাপক সাড়া তোলে। এরপর যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার ৪০টি প্রেক্ষাগৃহে সিনেমাটি মুক্তি পায় এবং প্রবাসী দর্শকদের মধ্যেও দারুণ প্রশংসা কুড়ায়। সিনেমাটির পরিবেশনা করছে ‘স্বপ্ন স্কেয়ারক্রো’।

🌍 পাকিস্তানে যাত্রা ও ডাবিং প্রক্রিয়া
পাকিস্তানে ‘জংলি’ পরিবেশনা করছে লাহোরভিত্তিক প্রতিষ্ঠান Cine Entertainment। প্রতিষ্ঠানটির কর্ণধার আসিফ চৌধুরী জানিয়েছেন, “বাংলাদেশি প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আমাদের সব আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়েছে। বর্তমানে উর্দুতে ডাবিংয়ের কাজ চলছে। এটি প্রথমবারের মতো কোনো বাংলা সিনেমা উর্দুতে ডাবিং হয়ে পাকিস্তানে মুক্তি পেতে যাচ্ছে, যা দুই দেশের সংস্কৃতির মধ্যে একটি সেতুবন্ধন গড়ে তুলবে।”

👥 অভিনেতা-অভিনেত্রী ও সংগীত
সিনেমাটির কেন্দ্রীয় চরিত্রে রয়েছেন জনপ্রিয় অভিনেতা সিয়াম আহমেদ। তার বিপরীতে আছেন শবনম বুবলী, যিনি সিনেমার ‘মা’ চরিত্রে আবেগঘন অভিনয় করেছেন। শিশু চরিত্র ‘পাখি’ হিসেবে দর্শকের হৃদয় জয় করেছে নৈঋতা। পাশাপাশি রয়েছেন এক সময়ের জনপ্রিয় শিশুশিল্পী দিঘী, যিনি বড়পর্দায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় অভিনয় করেছেন।

সিনেমাটির সংগীত পরিচালনা করেছেন প্রিন্স মাহমুদ, যিনি নব্বই দশকের গানে বিপ্লব এনেছিলেন। ‘জংলি’র আবহসংগীত ও গানে তার সংবেদনশীলতা ও নাটকীয়তা ফুটে উঠেছে।

🏢 প্রযোজনা ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
‘জংলি’ প্রযোজনা করেছে টাইগার মিডিয়া। প্রতিষ্ঠানটির কর্ণধার জাহিদ হাসান অভি বলেন, “সিনেমাটি দর্শকদের ভালোবাসায় সিক্ত হয়েছে। পাকিস্তানে মুক্তির উদ্যোগ একধরনের সম্মান ও স্বীকৃতি। আমরা আশাবাদী, প্রতিবেশী দেশেও দর্শকরা সিনেমাটি সাদরে গ্রহণ করবেন।”

📌 সাংস্কৃতিক সেতুবন্ধনের নতুন ধাপ
বাংলাদেশ-পাকিস্তান দুই দেশের মধ্যে সাংস্কৃতিক আদান-প্রদান বরাবরই সীমিত থাকলেও, ‘জংলি’র এই রপ্তানি একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচন করছে। বাংলা সিনেমা আন্তর্জাতিক পরিসরে আরও এগিয়ে যাবে, যদি এ ধারা অব্যাহত থাকে।