১৫ মে ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

আর্থনা সামিটে বিশ্বকে ৫ উদ্যোগের আহ্বান ড. ইউনূসের

সমাজকাল ডেস্ক :

কাতারে অনুষ্ঠিত ‘আর্থনা সামিটে’ এক অন্তর্ভুক্তিমূলক, সমতা-ভিত্তিক ও টেকসই ভবিষ্যতের জন্য বিশ্ব সম্প্রদায়কে পাঁচটি মৌলিক উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

মঙ্গলবার দোহায় আয়োজিত সামিটে ড. ইউনূস বলেন, “আমরা এক অস্থির ও বৈষম্যমূলক বিশ্বে বাস করছি। এই বাস্তবতায় সম্মিলিতভাবে আমাদের পথ খুঁজতে হবে।” তিনি বিশ্ব নেতাদের প্রতি যে পাঁচটি আহ্বান জানান, তা হলো—

১. আর্থিক অন্তর্ভুক্তি প্রসার:
প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য জীবনযাপন ও অর্থনীতিতে সক্রিয় অংশগ্রহণের পথ তৈরিতে তাদের আর্থিক ক্ষমতায়ন করতে হবে।

২. সামাজিক ব্যবসার প্রসার:
লাভ নয়, বরং উদ্দেশ্যকে অগ্রাধিকার দেয়—এমন ব্যবসা মডেল গড়ে তুলতে হবে যা সামাজিক ও পরিবেশগত সমস্যার টেকসই সমাধান দিতে পারে।

৩. তরুণদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা:
তরুণদের সম্ভাবনা ও শক্তিকে স্বীকৃতি দিতে হবে। তাদের জন্য কণ্ঠস্বর ও নেতৃত্বের প্ল্যাটফর্ম তৈরি করতে হবে।

৪. বৈশ্বিক শান্তি ও ন্যায়বিচার:
শান্তি ও ন্যায়বিচার ছাড়া টেকসই উন্নয়ন সম্ভব নয়। এটি মানবজাতির কল্যাণের পূর্বশর্ত।

৫. উন্নয়ন অর্থায়নের নৈতিক বাধ্যবাধকতা:
বিশ্ব সম্প্রদায়কে, বিশেষত উন্নত দেশগুলোকে, উন্নয়নশীল ও স্বল্পোন্নত দেশগুলোর জন্য প্রতিশ্রুত অর্থায়ন নিশ্চিত করতে হবে। তিনি ওডিএ লক্ষ্যমাত্রা শূন্য দশমিক ২ শতাংশ পূরণের ওপর জোর দেন।

ড. ইউনূস আরও বলেন, “আমাদের প্রয়োজন এক পাল্টা সংস্কৃতি—যেখানে থাকবে শূন্য বর্জ্য, শূন্য কার্বন নির্গমন এবং ব্যক্তিগত মুনাফার পরিবর্তে সমাজকল্যাণের অঙ্গীকার।”

তিনি কাতারকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, “এই সামিট প্রমাণ করেছে যে জলবায়ু পরিবর্তন, সামাজিক বৈষম্য ও ভবিষ্যতের কর্মসংস্থান মোকাবেলায় উদ্ভাবন ও ঐতিহ্যের সমন্বয় কীভাবে দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পারে।”

বাংলাদেশ প্রসঙ্গে ইউনূস বলেন, “আমরা এখন এক নতুন সামাজিক চুক্তির সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে। এই চুক্তির মূল ভিত্তি হবে অন্তর্ভুক্তি, মর্যাদা ও ন্যায়বিচার।” তিনি বিশ্ব সম্প্রদায়কে এই যাত্রায় অংশীদার হওয়ার আহ্বান জানান।