১৫ মে ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

আপনারা কি দেশের জন্য কাজ করছেন, নাকি আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসন করছেন, কর্নেল অলির প্রশ্ন

নিজস্ব প্রতিবেদক :

লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি)-এর সভাপতি কর্নেল (অব.) ড. অলি আহমদ বীর বিক্রম সরকারকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন, “আপনারা কি দেশের জন্য কাজ করছেন, না আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের জন্য অপেক্ষা করছেন?” শনিবার রাজধানীর রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে এক যোগদান অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, “প্রায় ৯ মাস হলো আপনারা ক্ষমতায়। কিন্তু জনগণের সমস্যা সমাধানে কোনো দৃশ্যমান উদ্যোগ নেই। বরং মনে হচ্ছে ক্ষমতা ভোগ করছেন। ৫ আগস্টের পর স্বৈরাচারের দোসরদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলাগুলোর কোনো সুষ্ঠু তদন্ত হয়নি, চার্জশিটও দেওয়া হয়নি।”

তিনি সতর্ক করে বলেন, “দেশ রক্তপাতের দিকে যাচ্ছে। আপনাদেরও হয়তো একদিন কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে। সময় থাকতে সঠিক পদক্ষেপ নিন।”

অনুষ্ঠানে লে. জেনারেল (অব.) ড. চৌধুরী হাসান সারওয়ার্দীর নেতৃত্বে সাবেক সামরিক কর্মকর্তা ও আমলাসহ পাঁচ শতাধিক ব্যক্তি এলডিপিতে যোগ দেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন এলডিপি মহাসচিব ড. রেদোয়ান আহমেদ এবং প্রধান অতিথি ছিলেন কর্নেল (অব.) অলি আহমদ।

তিনি আরও বলেন, “রাজনীতিকে অনেকে এখন ব্যবসায় পরিণত করেছে। সচিবালয়ে ঘুরে বেড়িয়ে তদবির করছে, অফিস ভাড়া নিয়ে অবৈধ অর্থ আয় করছে। এই অবস্থায় জনগণ যদি চুপ থাকে, তবে দেশের সর্বনাশ অনিবার্য।”

কর্ণেল অলি সরকারের কিছু দিক নির্দেশনার অভাব, দুর্নীতির বিস্তার এবং অর্থনীতির ফাঁপা বাস্তবতা তুলে ধরে বলেন, “কাগজে-কলমে উন্নয়ন হলেও বাস্তবে তার প্রতিফলন নেই। মাত্র ০.১০ বিলিয়ন ডলার বৈদেশিক বিনিয়োগ এসেছে ৮ মাসে।”

তিনি দাবি করেন, “দেশে আজ ফ্রিস্টাইলে চলছে। মিছিল, খুন, ডাকাতি বেড়েছে। অথচ সরকার নীরব দর্শক। জনগণ মনে করে, এসব কর্মকাণ্ডে সরকারের ইন্ধন রয়েছে।”

এছাড়া এল.আর. ফান্ডের নামে চাঁদা আদায়, সচিব পর্যায়ে বিলের অপব্যবহার এবং দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেওয়ার অভিযোগও তোলেন তিনি। তিনি বলেন, “হারাম খেয়ে ইবাদত করলে তা কবুল হয় না। এই ফান্ড বন্ধ করতে হবে।”

অলি আহমদ সরকারি প্রশিক্ষণের ভারত নির্ভরতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন এবং বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানান।

অনুষ্ঠানে এলডিপিতে যোগ দেওয়া লে. জেনারেল (অব.) চৌধুরী হাসান সারওয়ার্দীর ভূয়সী প্রশংসা করে অলি বলেন, “তিনি একজন দক্ষ, সাহসী ও অভিজ্ঞ সামরিক কর্মকর্তা, যিনি পার্বত্য চট্টগ্রামে গুলিবিদ্ধ হয়ে ‘বীর বিক্রম’ খেতাব অর্জন করেছেন।”

তিনি যুব সমাজকে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, “তোমরাই জাতির ভবিষ্যৎ। সততা, দেশপ্রেম ও নৈতিকতায় উদ্বুদ্ধ হয়ে সঠিক দিকনির্দেশনা দাও।”