অতিরিক্ত মোবাইল ব্যবহারে ঘাড়ের মারাত্মক ক্ষতি : জাপানে প্রথম ধরা পড়ল ‘ড্রপড হেড সিন্ড্রোম’। জাপানে এক যুবকের শরীরে প্রথম ধরা পড়েছে স্মার্টফোন আসক্তির বিরল পরিণতি—‘ড্রপড হেড সিন্ড্রোম’। চিকিৎসকদের মতে, মোবাইল ব্যবহারে অসতর্কতা হতে পারে ভবিষ্যতের জন্য বিপদজনক।
সমাজকাল ডেস্ক:
স্মার্টফোনে অতিরিক্ত আসক্তি আজকালকার তরুণদের মধ্যে এক বিপজ্জনক স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করছে। সম্প্রতি জাপানে ২৫ বছর বয়সী এক যুবকের শরীরে ধরা পড়েছে একটি বিরল রোগ—‘ড্রপড হেড সিন্ড্রোম’। চিকিৎসকদের মতে, দীর্ঘ সময় ধরে নিচু হয়ে মোবাইল ফোন ব্যবহারের ফলে তাঁর ঘাড়ের পেশি এতটাই দুর্বল হয়ে পড়ে যে তিনি আর মাথা সোজা রাখতে পারেননি।
জাপানিজ অর্থোপেডিক সোসাইটি’র প্রকাশিত ‘JOS Case Reports’-এ উঠে এসেছে, ওই যুবক কৈশোরে চরম মানসিক হেনস্তার শিকার হয়ে স্কুল ছেড়ে দেন এবং একা ঘরে বসে স্মার্টফোনে সময় কাটাতেন। এই দীর্ঘসময়ের অভ্যাসে তাঁর ঘাড়ের হাড় ও পেশিতে মারাত্মক ক্ষয় সৃষ্টি হয়। চিকিৎসকদের ভাষ্যে, তাঁর ঘাড়ে দেখা যায় বিকৃতি, ব্যথা, খাবার গিলতে অসুবিধা এবং ওজন হ্রাসের মতো উপসর্গ। এমনকি ঘাড়ে বড় একটি ফোলাও সৃষ্টি হয়।
চিকিৎসা চলাকালীন কলার ব্যবহারেও উপকার না হওয়ায় শেষমেশ অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নিতে হয়। মেরুদণ্ডের ক্ষতিগ্রস্ত অংশ বাদ দিয়ে ধাতব স্ক্রু ও রড বসিয়ে ঘাড়কে স্থিতিশীল রাখা হয়েছে। ছয় মাসের পুনর্বাসন চিকিৎসায় ওই যুবক ধীরে ধীরে স্বাভাবিক জীবনে ফিরছেন, তবে সম্পূর্ণ সুস্থ হতে আরও দীর্ঘ সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
বিশেষজ্ঞদের সতর্কবার্তা, দীর্ঘ সময় নিচু হয়ে মোবাইল দেখা কিংবা খারাপ ভঙ্গিমায় বসে স্মার্টফোন ব্যবহার করলে ‘ড্রপড হেড সিন্ড্রোম’-এর মতো জটিলতা তৈরি হতে পারে। চিকিৎসকদের পরামর্শ— মোবাইল ব্যবহার করতে হলে প্রতি আধঘণ্টা অন্তর বিরতি নেওয়া, শরীর সোজা রাখা এবং ঘাড়ের ওপর চাপ কমিয়ে চলা অত্যন্ত জরুরি।
এই ঘটনা একটিই যথেষ্ট আমাদের সতর্ক হওয়ার জন্য। প্রযুক্তি হোক আমাদের সহায়ক, সর্বনাশের কারণ নয়।